ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর :
সিলেটে হযরত শাহজালাল (র.) এর মাজার জিয়ারত করতে যাওয়ার সময় মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার ৬ জন। আহত হয়েছেন আরও চারজন।
বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) রাত আড়াইটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় এ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।
বিজয়নগর উপজেলার ভাটি-কালিসীমা এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মাইক্রোবাসটির (ঢাকা মেট্রো- চ ১১৩৮৬৭) সঙ্গে সুনামগঞ্জ থেকে আসা ঢাকাগামী লিমন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসের (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫০৪৮৭) মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের পর মাইক্রোবাসের গ্যাস সিলিন্ডারে লিকেজের কারণে গ্যাস বের হয়ে আগুন ধরে যায়। দাউ দাউ করে জ্বলতে শুরু করে আগুন।
এ সময় ভেতরে থাকা আরোহীরা বাঁচার জন্য আর্তনাদ করতে থাকলেও শেষ পর্যন্ত অঙ্গার হয়ে যান শাকিল (২৫), সোহান (২০), সাগর (২২), ইমন (১৯), রিফাত (১৬) ও হারুন (৪০)। এ ঘটনায় আহত হন শাহীন (৩০), জিসান (২৪), আবির (১৯) ও বিজয় (১৯)। তাদেরকে প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
দুর্ঘটনায় আহত জিসান জানান, তিনি ও তার বন্ধু সাগর একসঙ্গে বসেছিলেন। বাসের সঙ্গে তাদের মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হওয়ার পর তিনি মাইক্রোবাস থেকে ছিটকে নিচে পড়ে যান। সাগরসহ অন্য আরোহীরা মাইক্রোবাসের ভেতরই ছিলেন। সাগর অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন।
দুর্ঘটনায় বাসটিও মহাসড়কের পাশে খাদে পড়ে যায়। তবে বাসের কোনো যাত্রী তেমন আহত হননি বলে জানিয়েছে পুলিশ। মাইক্রোবাসটিতে আগুন জ্বলতে থাকার সময় ভেতরে থাকা আরোহীরা সাহায্যের জন্য আকুতি জানালেও আগুনের ভয়ে কেউই এগিয়ে আসেনি। আগুন নেভার পর পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এক এক করে পাঁচজনের অগ্নিদগ্ধ মরদেহ বের করেন মাইক্রোবাসের ভেতর থেকে। আর জীবিত উদ্ধার হওয়া পাঁচজনকে হাসপাতালে নেয়ার পথে একজন মারা যান।
খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রেমধন মজুমদার জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কিছু সময়ের মধ্যেই আমরা ঘটনাস্থলে আসি। অনেককে সাহায্যের জন্য ডেকেছি। কিন্তু আগুনের তীব্রতার কারণে ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। যদি এগিয়ে আসত তাহলে হয়তো জীবিত উদ্ধার করা যেত। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভানোর পর মাইক্রোবাসের ভেতর থেকে হতাহতদের বের করা হয়।
ময়মনসিংহ
রূপগঞ্জের এক যুবক ময়মনসিংহের ভালুকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। শুক্রবার ভোরে ভালুকা উপজেলার মেহরাবাড়ি এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম মো. আজিম (২৩)। সে রূপগঞ্জ থানার তালাশ কোর্ট এলাকার আবদুস সালামের ছেলে।
ভালুকা হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক মাহমুদ আদনান বলেন, মাছভর্তি ছোট পিকআপের চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অপর একটি বড় পিকআপের সঙ্গে ধাক্কা লাগালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পিকআপ দুটি জব্দ করা হয়েছে। নিহতের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।
সাভার
সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উলাইল এলাকায় ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী আকাশ আহম্মেদ (২২) নামে শিল্প পুলিশের এক কনস্টেবল নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঘাতক ট্রাকটি পুলিশ আটক করলেও এর চালক তাৎক্ষণিকভাবে পালিয়ে গেছে। শুক্রবার সকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উলাইল এলাকায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আকাশ আহম্মেদ ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার আব্দুল মজিদের ছেলে। ২০১৮ সালে তিনি নারায়নগঞ্জ শিল্প পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে যোগদান করেন। তবে বর্তমান পরিবার নিয়ে আশুলিয়ার শ্রীপুর এলাকায় নিজ বাড়িতে বসবাস করছিলেন।
সাভার হাইওয়ে পুলিশ জানায়, নিহত ওই শিল্প পুলিশ সদস্য কয়েক দিন পূর্বে নিজ কর্মস্থল নারায়নগঞ্জ শিল্প পুলিশ কার্যালয় থেকে আশুলিয়ার শ্রীপুরের নিজ বাড়িতে আসেন। পরে আজ সকালে মোটরসাইকেল যোগে তিনি একাই আবারও নারায়নগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এসময় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উলাইল এলাকায় পেছন থেকে আসা দ্রুতগামী বেপড়োয়া ট্রাক তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে স্থানীয়রা ঘাতক ট্রাকটি আটক করলেও এর চালক পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ, দুর্ঘটনাকবলিত মোটরসাইকেল ও ঘাতক ট্রাকটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
সাভার হাইওয়ে পুলিশের ইন্সপেক্টর (ওসি) আব্দুল্লাহ হেল বাকী জানান, ট্রাকচাপায় নিহত পুলিশ সদস্য আকাশ আহম্মেদের মরদেহ হাইওয়ে থানায় নিয়ে আনা হয়েছে । এ ঘটনায় ঘাতক ট্রাকের চালককে আটকের চেষ্টা চলছে । একই সাথে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে নিহতের মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান তিনি।
Discussion about this post