নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী মেঘনা ও সিটি গ্রুপের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আপনারা নিজস্ব উদ্দোগে ইকোনমিক জোন গড়ে তুলেছেন এটা আনন্দের খবর । দেশের মানুষের কর্মসংস্থান হবে । কিন্তু এও বিবেচনায় রাখবেন আসছে পবিত্র রমজানে অধিক মূণাফা করতে গিয়ে যেন দেশের মানুষের কষ্ট না হয় । কারণ রমজান আসলেই ব্যবসায়ীরা অধিক মুণাফা করতে তৎপরতা বাড়িয়ে দেন । এই দিকটি অবশ্যই গুরুত্ব দিবেন যেন খাদ্য সামগ্রীর মূল্য কোন অবস্থাতেই না বৃদ্ধি পায় ।
বুধবার ৩ এপ্রিল সকাল এগারোটায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই ইকোনোমিক জোনের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যবসায়ীদের এবাবেই সতর্ক করেন ব্যবসায়ীদের । রূপগঞ্জের রুপসী গন্ধর্বপুর এলাকায় সিটি গ্রুপের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত সিটি ইকোনোমিক জোন, সোনারগাঁয়ে অবস্থিত মেঘনা ইকোনমিক জোন, মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোন তিনটি নতুন জোনের উদ্বোধন করেন প্রধানম,ন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ সময় ব্যবসায়ীরা প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্থ করেন কোন অবস্থাতেই খাদ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি হরব না। খাদ্য সামগ্রীর পর্যাপ্ত মজুদ আঝে বলেও ব্যবসায়ীরা অঙ্গিকার করেন।
বুধবার সকালে গণভবন থেকে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ তিনটি জোটের উদ্ধোধন করেন।
রূপগঞ্জে পাট ও বন্ত্র মন্ত্রী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দন্তগীর গাজী বীরপ্রতীক এই অর্থনৈতিক জোন প্রসঙ্গে বলেন, সিটি ইকোনোমিক জোনকে কেন্দ্র করে এখানে একটি নতুন কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরী হয়েছে। মানুষের পদচারনা বাড়ায় অনেকে বাড়ি ভাড়া দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করার সুযোগ পেয়েছ।
অপরদিকে সকালে সোনারগাঁ উপজেলার টিপরদী এলাকায় মেঘনা ইকোনমিক জোন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া। তিনি বলেন,এ শিল্পকারখানা চালু হলে ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে এবং এক বিলিয়ন মার্কিন বিনিয়োগে নুন্যতম ২০ টি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন,নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা, নবনির্বাচিত সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন,সাবেক সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার, নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারী পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মনিরুল ইসলাম, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার ও সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান প্রমুখ।
সিটি গ্রুপের ইকোনমিক জোনে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতিক, সিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান, নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দার, রূপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহহাজান ভ্ইুয়া, উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগম মমোসহ সিটি গ্রুপের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা।
সিটি ইকোনোমিক জোন কর্তৃপক্ষ জানান, রাজধানী থেকে ৩৫ কিলোমিটার দুরে নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর তীরবর্তী প্রায় ১০০ একর জমির উপর এই অর্থনৈতিক জোন গড়ে উঠেছে। এই ইকোনোমিক জোনে খাদ্য, পানীয়, কৃষিপণ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পসহ রপ্তানীমুখি বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান থাকবে। এই অর্থনৈতিক জোনটি নদীর তীরে অবস্খিত হওয়ায় যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনে অর্থ ও সময় সাশ্রয় হবে। এই জোনে ৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা, সার্বক্ষনিক গ্যাস সরবরাহ, পানি সরবরাহসহ টেলি যোগাযোগ ও ইন্টারনেট সুবিধাও রয়েছে। এই ইকোনোমিক জোনের আওতায় রয়েছে সাতটি শিল্প প্রতিষ্ঠান। সিটি ইকোনমিক জোন, সিটি অটো রাইস ও ডাল মিল, সিটি এডিবয়েল, রপসী সুগার মিল, রুপসী ফ্লাওয়ার মিল, রুপসী ফিড মিল, সিটি সীড ক্রাসিং।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান মো: ফজলুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, পাঁচ হাজার কোটি ব্যয়ে একশ’ একর জমির উপর নির্মিত সিটি ইকোনোমিক জোনের আজ যাত্রা শুরু হলো। এখানে আট হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এখানে আরো পনের হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। এতে আরো ২০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। সরকারের সহযোগিতায় এখানে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ইকোনোমিক জোন গড়ে তুলতে পারায় সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানান।
মন্ত্রী জানান, সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান তার শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার শুরুতেই এখানে ব্যক্তিগত অর্থায়নে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে সিটি ইকোনোমিক জোনের সামনের চার লেনের রাস্তাটি নির্মান করেছিলেন। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব যানবাহনের পাশাপাশি অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠন ও সাধারণ মানুষের যানবাহনও চলাচল করছে। যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং জনদূর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
মন্ত্রী আরো জানান, এডিবির মাধ্যমে এই সড়কটির আধুনিক সংস্কার কাজের দরপত্র হয়ে গেছে। শীঘ্রই সড়কটি সংস্কারের কাজ শুরু হবে। আর কাউকে দূর্ভোগ পোহাতে হবে না বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
Discussion about this post