মধ্যপ্রাচ্য কাতার থেকে দেশে এসেছেন বিয়ে করবেন প্রবাসী ইমন খান (২৫)। শুক্রবার ৬ মার্চ হবু স্ত্রী জেরিন তালুকদারকে আনুষ্ঠানিক ভাবে আংটি পড়ানোর কথা ছিলো। বাবা ছোট ভাইসহ আত্মীয় স্কজনদের নিয়ে নারায়ণগঞ্জ হতে সিলেটের সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে হবু শশুর বাড়িতে যাওয়ার আগেই সড়ক দুর্ঘটনায় বর সহ ১০ জন নিহত হয়েছেন ।
একটি দুর্ঘনায় বিয়ের উৎসবের পরিবর্তে ইমনসহ ১০ জন পরপারে চলে গেছেন । ইমনের হবু শশুর বাড়ি যাওয়ার আগেই একটি দুর্ঘটনায় সব কিছু উলটপালট করে দিয়েছে। কাতার প্রবাসী ইমনের পরিবারের সব স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়ে গেছে। ইমনের বাড়িতে বিয়ের উৎসবের পরিবর্তে শোকের ছায়া ।
সেই সুনামগঞ্জের দিরাই যাওয়ার পথে হবিগঞ্জে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১০ জনের জানাজা নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার (৭ মার্চ) সকালে জানাজা শেষে নিহতদের মধ্য সাতজনকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। অন্য তিনজনের মরদেহ নিজ এলাকা বরিশালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এর আগে ভোরে হবিগঞ্জ থেকে নিহত আব্বাস উদ্দিন খান (৫৫), ইমন খান (২৬), রাব্বি খান (২৩), রাজিব আহমেদ (২৭), আসমা বেগম (২৮), খলিল (২৫), হাজি মহসীন (৭০), ইমরান মিয়া (২৪), সুমনা বেগম (২৮) ও খাদিজা আক্তারের (৪) মরদেহ ফতুল্লার পাগলা মুসলিমপাড়া ও চিতাশাল নিয়ে আসা হয়। জানাজা শেষে সকাল ৯টায় পাগলা শাহি মহল্লা কবরস্থানে পাঁচজন ও দেলপাড়া কবরস্থানে দুজনকে দাফন করা হয়। বাকি তিনজনের মরদেহ বরিশালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে নিহতদের মরদেহ বাড়ি আনার সঙ্গে সঙ্গে স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। মরদেহ বাড়িতে আসার সংবাদে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ তাদের বাড়িতে ছুটে আসে। একসঙ্গে ১০ জনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে এসেছে।
আব্বাস উদ্দিন খানের গ্রামের বাড়ি বরিশালে। কিন্তু থাকতেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায়। তিনি একটি ব্যাংকে চাকরি করতেন। স্বজনদের নিয়ে নিজের কাতার প্রবাসী ছেলে ইমনের পাত্রী দেখতে মাইক্রোবাস যোগে নারায়ণগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জের দিরাই যাচ্ছিলেন। পথে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে এসে মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই ৮ জন মারা যায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও একজনের মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৩ টায় মারা যায় বেলায়েত হোসেনের মেয়ে খাদিজা।
নিহতদের মধ্যে আব্বাস উদ্দিন, ইমন, রাব্বী, রাজিব ও হাজী মহসীনের মরদেহ দাফন করা হয় পাগলা শাহি মহল্লা কবরস্থানে। সুমনা ও তার শিশুসন্তান খাদিজার মরদেহ দাফন করা হয় দেলপাড়া কবরস্থানে। অন্যদিকে ইমরান, খলিল ও আসমার মরদেহ বরিশালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের মরদেহ দাফন করা হবে।
Discussion about this post