শহরের আমলাপাড়ার জামায়াত শিবিরের পৃষ্টপোষক মৃত খবির উদ্দিনের ৪তলা বাড়ির তৃতীয় তলায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলেও এখনো পর্যন্ত কেউ এমন বিস্ফোরণের কারণ জানাতে পারে নাই । ঠিক তেমনি এই ঘটনার পূর্বে একই পন্থায় রহস্যজনক বিস্ফোরণ ঘটেছিলো । ওই সময় এই বাড়ির একজন ভাড়াটিয়া চিকিৎসক আহত হলেও তা ধামাচাপা পরে যায় আরেক রহস্যজনক কারণে ।
কয়েক বছর পূর্বে নারায়ণগঞ্জ শহরের নিতাইগঞ্জের কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী প্রয়াত পুলিশ নাড়ুর চিনির গোডাউনে রহস্যজনক বিস্ফোরণে ৫ জন নিহত হয়েছিলো । এই বিস্ফোরণের রহস্য আজো কেউ উদঘাটন করতে পারে নাই । কি কারণে এই বিস্ফোরণ হলো সেই রহস্য উদঘাটনে সিআইডিসহ প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থা কাজ করলেও কেউ হদিস দিতে পারে নাই এমন ভয়াবহ বিস্ফোরণের নেপথ্যে কি ছিলো।
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আমলাপাড়া ৩১নং এইচকে ব্যানার্জি রোডের মৃত খবির উদ্দিনের ৪তলা বাড়ির তৃতীয় তলায় এঘটনা ঘটে।
এমন বিষ্ফোরণে ২ জন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন, মাসদাইর এলাকার শামীম ও সোহেল। বিষ্ফোরনে বাড়ির দুটি ফ্ল্যাটের জানালার সবকটি গ্লাস ভেঙে যায়। এছাড়া পাশের একটি ফ্ল্যাটের দরজা-জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিষ্ফোরনের শব্দের মাত্রা খুব তীব্র হওয়ায় আশেপাশের বাড়ি এবং রাস্তায় চলাচলকারী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া নিচতলায় থাকা আছনা ডায়াগনোষ্টিক কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরাও আতঙ্কিত হয়ে হাসপাতাল থেকে বেড়িয়ে আসে।
বাড়ির ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা রকিব উদ্দিন সোহাগ গণমাধ্যমকে বিভ্রাুিন্তকর তথ্য প্রদানের এক পর্যায়ে বলেন, তৃতীয় তলার ওই ফ্ল্যাটে ইলেক্ট্রনিক মিস্ত্রিরা কাজ করছিলো। আমি তখন নিচতলায় ছিলাম। বিকট আওয়াজ শোনার পর দৌড়ে সেখানে যাই। গিয়ে দেখি ওই ফ্ল্যাটের চারিদিকের জানালার কাচ ভেঙে গেছে। দুটি দরজাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহত দুইজনকে তাড়াতাড়ি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কিভাবে বিষ্ফোরন হলো তা বলতে পারছিনা।
প্রত্যাক্ষদর্শী অনেকেই বলেন, হঠাৎ করে এমন বিকট শব্দে বিষ্ফোরণের পর পথচারী ও ফ্লাটের অনেকেই ছুটোছুটি শুরু করে । কিছুক্ষন পর পুলিশ আসলেও তারা কোন কিছু বলতে পারে নাই । তবে পুলিশের কেউ কেউ বাড়ীর ভিতরে প্রবেশ করলেও কেউ সেখানে প্রবেশ করতে দেয় নাই বাড়ির দাড়োয়ান ও ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা রকিব উদ্দিন সোহাগ । পুলিশের সাথে সোহাগের এমন আচরণ আরো রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে ।
বাড়ির মালিকের মেয়ে খোরশেদা হোসেনের ছেলে মো.হোসেন উপস্থিত সকলের সাথে আলোচনা কালে জানায় , দুইমাস ধরে ফ্ল্যাটটিতে কাজ চলছিলো। তবে কিভাবে এই বিষ্ফোরন হলো তা বলতে পারছিনা।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, বিষ্ফোরনের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম । আহতদের সাথে কথা বলা যায়নি । আহত দুজনের হাত ও পায়ে ঝলসে গেছে বলে শুনেছি। তবে বাইরে থেকে কোন বিস্ফোরক দ্রব্য নিক্ষেপ করলে আমরা ঘটনাস্থলে সে ধরণের আলামত পেতাম। ধারণা করছি, হয়তো অবৈধভাবে সেই তার থেকে লাইন নিয়ে তারা কাজ করতে গিয়ে তাদের যন্ত্রপাতি থেকে এই বিষ্ফোরণ ঘটেছে। বিকট আওয়াজসহ বড় ধরণের বিস্ফোরনে বাড়ির জানালা দরজা ভেঙে যাওয়ার চারিদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আরো তদন্ত চলছে ।
নাম, প্রকাশ না করার শর্তে, আমলাপাড়ার অনেকেই বলেন বিকট বিস্ফোরণের ঘটনায় এলাকাবাসী আতংকিত হয়ে পরেছে। এই বাড়িটি রহস্যে ঘেরা । এই বাড়িটি সহ আমলাপাড়ার আরো কয়েকটি বাড়িতে জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীদের গোপন বৈঠকের গুঞ্জন রয়েছে । ঘটনার পর পর ডিবি পুলিশ বাড়ির দাড়োয়ান ও ম্যানেজারকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো বলে সকলেই দেখেছে । আবার তাকে কয়েক ঘন্টার মধ্যে ছেড়েও দেয়া হয়েছে । এর আগেও একবার একই ধরণের বিস্ফোরণে একজন চিকিৎসক (যিনি এই বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিলেন) বিষ্ফোরণে আহত হলেও তার হদিস আর কেউ পায় নাই। আরো অনেক আলোচনা সমালোচনা রয়েছে এই বাড়িটি ঘিরে ।
Discussion about this post