এনএনইউ রিপোর্ট :
অসংখ্য খুন, অসংখ্য মাদক ব্যবসায়ীদের ডিলার নিয়োগ করে শহরের সর্বত্র মাদকের পাইকারী ও খুচরা বিক্রির বিরোধকে কেন্দ্র করে একের পর এক প্রতিপক্ষের উপর নির্মম হামলা পরিচালানাকারী হাসান (৩৫) র্যাবের সাথে ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছে।
দূর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী হাসানের মৃত্যুর ঘটনায় দেওভোগ এলাকায় স্বস্তির নিস্বাস ফেলেছে দেওভোগবাসী।
ঘটনার বিবরণে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক নাজমুল হোসেন জানান, নিহত হাসানের শরীরে গুলিবিদ্ধ হওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। সকাল ৬টায় নিহতের পাশাপাশি র্যাবের দুইজন সদস্য আহত হয়েছে। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
ক্রসফায়ারে নিহত হাসানের ভাই মাসুদ জানায়, ঘটনার সম্পর্কে আমরা কিছুই জানতাম না । সকালে ঘুম থেকে উঠে টিভিতে দেখি হাসান ক্রসফায়ারে মারা গেছে। পরে খোজ নিয়ে জানতে পারি আমার মা ও হাসানের বউ রোখসানাকে আদমজী নিয়ে গেছে। হাসানের এমন জীবন যাপনের কারণে আমরা পরিবারের লোকজন নানাভাবে আতংকের মধ্যে থাকতাম। হাসানের অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন আমাদেরকে ও প্রশাসন হয়রানী করতো।
র্যাব ১১ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক আলেপ উদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের শহীদ নগরস্থ আলামিন নগরের একটি বাড়ীতে অভিযান চালালে আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলিবর্ষন শুরু করে সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের গুলি বর্ষনে র্যাবের দুই সদস্য আলম ও আল আমিন আহত হলে র্যাব ও পাল্টা গুলিবর্ষন করার এক পর্যায়ে অভিযান চালিয়ে আহত অবস্থায় হাসানসহ র্যাবের আহত সদস্যদের জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়া) নিয়ে আনার পর চিকিৎসক হাসানকে মৃত ঘোষনা করেন। এই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতিও চলছে বলে জানান আলেপ উদ্দিন।
অভিযানে হাসানের ব্যবহৃত অস্ত্র, গুলি ও ২ হাজার ৫শ পিছ ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করা হয়েছে । নিহত হাসানের বিরুদ্ধে বাবু, শিপলু হত্যাসহ আরো কয়েকটি হত্যা, ডাকাতি এবং প্রায় ২০টি মামলা রয়েছে। প্রতিটি মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী ছিলো নিহত হাসান।
দেওভোগ এলাকার অনেকেই জানান, দূর্ধর্ষ মেজর ও পারভেজ মারা যাবার পর তাদের রেখে যাওয়া প্রায় ২০/২২টি অস্ত্র ছিলো হাসানের কাছে। হাসান নিজে অস্ত্রভান্ডার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি হাসানের ঘনিস্ট সহযোগি তুহিন ও ডেবিড এই অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করে আসছে । সর্বশেষ গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের আগে হাসান, ডেবিড, তুহিন সহ আরো কয়েকজন দেওভোগ এলাকার সঞ্জয় নামের এক যুবককে গুরুতর আহত করে । যা এলাকার সকলেই দেখেছে । আর সঞ্জয় পুলিশের সোর্স ছিলো বলে চাউর রয়েছে। হাসানের অবর্তমানে হাসানের স্ত্রী দেওভোগ পশ্চিম নগরের মুছার বোন রোখসানা নিজেই মাদকের সাম্রাজ্য পরিচালনা করে । মাদক ব্যবসা করে হাসান দুইটি বাড়ীসহ অনেক সম্পদের অধিকারী বলে জানায় অনেকেই। একই সাথে দূর্ধর্ষ হাসানের বিশাল বাহিনী ছাড়াও পুলিশের একটি অসাধু চক্র হাসানকে নানাভাবে সহায়তা করতো।
Discussion about this post