এনএনইউ রিপোর্ট :
নির্বাচন বানচাল, গামেন্টস শিল্পে অস্থিতিশীল ও নারায়ণগঞ্জে নাশকতা করতে জেলার বিভিন্ন স্থানে গোপন বৈঠক চলাকাল পুলিশ ও র্যাব সদস্যার কয়েক ঘন্টা শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালিয়ে নারী সদস্যসহ জামায়াত শিবিরের ১৫১ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।
১৪ ডিসেম্বনর সকাল থেকে জেলার সদর, বন্দর ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ এবং র্যাব সদস্যরা এই অভিয়ান চালায়। সকাল থেকে চলমান এই অভিযান এখনো পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে স্থাপিত মিডিয়া সেলের প্রধান ইন্সপেক্টর সাজ্জাদ রুমন।
ফতুল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম মঞ্জুর কাদের জানান, সকাল সাড়ে দশটায় সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার পাগলা হাই স্কুলে বসে নাশকতার পরিকল্পনার উদ্দেশ্যে গোপন বৈঠক চলাকালে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। এদিকে শহরের চাষাঢ়া এলাকা থেকে নাশকতার মামলার আসামী মহানগর ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি গোলাম সারোয়ার সাঈদকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
এসময় জামাত শিবিরের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী সহ ৪৯ জনকে আটক করা হয়। দুপুর বারোটায় মাসদাইর এলাকায় অবস্থিত ইসলামীয়া আদর্শ স্কুল মাদ্রাসা থেকে ৫ নারীসহ ৫৪ জন জামাত শিবিরের নেতাকর্মীকে গোপন বৈঠক থেকে আটক করে পুলিশ।
সকাল থেকে এ পর্যন্ত জামায়াত শিবিরের ১৫১ জন নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে । এর মধ্যে কয়েকজন নারী সদস্যও রয়েছে । তদন্তের স্বার্থে আটককৃতদের নাম পরিচয় এখন প্রকাশ করা এখন সম্ভব নয়। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে আটককৃতদের মধ্যে জামায়াত নেতা ইয়াসিন মাস্টার রয়েছেন ।
আটকের পূর্বে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জামাত শিবির ও বিএনপির অনেক শীর্ষ নেতারা পালিয়ে গেছে। তাদেরকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
দুপুরে শহরের আমলাপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৬ জনকে আটক করেছে সদর থানা পুলিশ। তবে তাদের মধ্যে স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক আশুতোষ কুমার সাহা সহ ৭ জন শিক্ষক রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে আশুতোষ জানিয়েছে তার এক ছাত্রীর এডমিট কার্ড দিতেই জিনিয়াস কোচিং সেন্টারের লোকজনের কাছে এসছেন তিনি ।
বিদ্যালয়টির অন্যান্য শিক্ষকরা জানান, জেলার বিভিন্ন স্কুলে একযোগে জিনিয়াস বৃত্তি পরীক্ষা চলছে। শুক্রবারও পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা চলাকালীন অবস্থায় পুলিশ বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে জামাত শিবির কর্মী অভিযোগে অনেককেই আটক করেছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, শহরের প্রেসিডেন্ট রোড, আমলাপাড়াসহ আশেপাশের কয়েকটি এলাকার গোপন আস্তানায় জামায়াত শিবির ঘাপটি মেরে নাশকতার চেস্টা চালাচ্ছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ রয়েছে। জিনিয়াস কোচিং সেন্টারের অন্তরালে জামায়াত শিবির নাশকতার পরিকল্পনা করছিলো ।
এছাড়াও গোয়েন্দা পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালে নানা নাশকতা, জেলা ও দায়রা জজের বাসভবনে কারা কারা একটি ক্লিনিকে বসে জঙ্গিদের নিয়ে গোপন আতাঁতের পর অগ্নি সংযোগ ও বোমা হামলা করেছিলো তার সকল তথ্য মোতাবেক এগিয়ে যাচ্ছে আইনশৃংখলা বাহিনী । ইতিমধ্যেই গোয়েন্দাদের হাতে শহরের কয়েকটি ক্লিনিক/ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক/অংশিদার জামায়াত ইসলামীর শীর্ষ নেতা সাদেক ও তার নিয়ন্ত্রিত বাহিনীর গোপন বৈঠকের ভিডিও চিত্র হাতে পাওয়া গেছে । পুরাতন নাশকতা ও বর্তমানের গোপন বৈঠকের তথ্য সূত্র ধরেই এগিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন। ওষুধ ও ক্লিনিক ব্যবসার অন্তরালে এবং প্রশাসনের কিছু অসাধু চক্রের সহায়তায় বিগত সময়ে সাদেক বাহিনী চাপাইনবাবগঞ্জে দীর্ঘ ৬ মাস পালিয়ে থেকে আবার নাশকতার পরিকল্পনা চালাচ্ছে বলেও প্রমান রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে। গোপন মিটিংয়ের কিছু চিত্রও পাওয়া গেছে যাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে জামায়াতের শীর্ষ নেতা সাদেক।
Discussion about this post