নিম্নে উল্লেখিত এমন ঘটনা ছাড়াও শহরের ডিআইটি, ২নং রেল গেইট, ফলপট্টি ও নারায়ণগঞ্জ কলেজের সামনে, রেলস্টেশন, কালীরবাজার, কালীরবাজার স্বর্ণপট্টি, গ্রীন্ডলেস ব্যাংকের মোড় এলাকায় রয়েছে শহরের চিহ্নিত ছিনতাইকারী একাধিক চক্র।
অতি সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ শহরের আওয়ামী লীগ পরিবারের এক কলেজপড়ুয়া ছাত্রকে অভিনব কায়দায় আটক করে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা ।
এ ঘটনায় কলেজপড়ুয়া ছাত্র তার বাবাকে সাথে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় অভিযোগ করতে গেলে ঘটনাটি জিডি আকারে গ্রহণ করে বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন ইন্সপেক্টর তদন্ত মোস্তাফিজুর রহমান । এমন অসংখ্য ঘটনা অহরহ ই ঘটছে কয়েক কিলোমিটারের এই শহরে
নারায়ণগঞ্জ শহরের অন্যতম প্রধান ব্যস্ত এলাকা হচ্ছে চাষাঢ়া এলাকা। দিন রাত ২৪ ঘণ্টায় এখানে মানুষের যাতায়াত থাকে। সেই সাথে এই এলাকায় রয়েছে একটি পুলিশ বক্স রয়েছে সিসি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে। ফলে সহজেই চাষাঢ়া এলাকায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার কথা নয়। কিন্তু এই ব্যস্ততম ও নিরাপত্তা বেষ্টিত এলাকার মধ্যে অহরহ চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে যাচ্ছে।
এই চাষাঢ়া এলাকাটি যেন চুরি ছিনতাইকারীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়তই কোনো না কোনো মানুষ নগদ টাকা, দামী মোবাইল সহ সাথে থাকা সবকিছু খোয়াচ্ছেন। সবকিছু দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে ঘটলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ প্রশাসনের কোনো তদারকি পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
ডা. নাজিবুর রহমান নামে একজন জানান, তিনি ২ ডিসেম্বর বুধবার সকালে ঢাকা থেকে মৌমিতা বাসে করে নারায়ণগঞ্জে ফিরছিলেন। সকাল ১০ টার দিকে তিনি চাষাঢ়া এলাকায় মৌমিতা বাস থেকে নামেন। বাস থেকেই তিনি একটি রিক্সা নেন। রিক্সায় উঠার সাথে সাথেই অজ্ঞাত চারজন লোক এসে ঘিরে ধরে। এর মধ্যে একজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় ঠেক দিয়ে রাখে।
একপর্যায়ে তারা বলে আমরা এলাকার স্থানীয় লোক। আমরা খারাপ লোক। আমাদের মিষ্টি খাওয়ার জন্য টাকা দেন। তাদের কথা শুনে ডা. নাজিবুর রহমান কোনো উপয়ান্তর না দেখে মানিব্যাগ থেকে এক হাজার টাকার নোট বের করে দেন। মানিব্যাগে আর কোনো টাকায় তারা পকেটে হাত দেন। পকেটে টাকা মোবাইলটি নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
ডা. নাজিবুর রহমান বলেন, সকলের সামনেই চোখের পলকে ঘটনাটি ঘটে গেলো। আমি নির্বাক হয়ে গেলাম। পরে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় অভিযোগ করলে তারা আশ্বস্ত করে বললেন বিষয়টি দেখবেন। কিন্তু কবে এই ঘটনার প্রতিকার পাবেন সেটা তার জানা নাই।
এর আগে গত কয়েকদিন পূর্বে নতুন কোর্ট এলাকা থেকে মোমিতা বাস দিয়ে চাষাঢ়ায় আসছিলেন রহমত আলী। তিনি বলেন, চাষাঢ়া নামার সাথে সাথেই তার পকেটে হাত দিয়ে দেখেন পকেটে থাকা অনেক দিনের শখের দামী মোবাইলটি নেই। কিছুক্ষণ সময়ের জন্য তিনি কিংকর্তব্যবিমূড় হয়ে পড়েন। কোনো পথ খুজে পাচ্ছিলেন না কি করবেন। পরে অবশ্য থানায় একটি জিডি করেছিলেন। কিন্তু আজও তার সেই মোবাইল ফেরত পাননি।
এভাবে নারায়ণগঞ্জ শহরের অন্যতম প্রধান ব্যস্ততম এলাকা চাষাঢ়ায় প্রতিনিয়তই সাধারণ মানুষজন সাথে থাকা সবকিছু খোয়াচ্ছেন। কোনা প্রতিকার খুঁজে পাচ্ছেন না।
পুলিশ প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, আমরা তো এসকল চোর ছিনতাইকারী ধরি। ধরে মামলা দিয়ে কারাগারেও পাঠাই। কিন্তু আদালত থেকে জামিন পেয়ে তারা ফের চুরি ছিনতাইয়ে জড়ান। আমরা আবার ধরি আবার জেলে দেই। তারাও আবার জামিন পায়। কিন্তু চুরি ছিনতাই তারা আর ছাড়ে না। এক্ষেত্রে আমরা তো কিছু করতে পারি না।
Discussion about this post