নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সামছুল আলম মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে চাষাড়া নূর মসজিদের পাশের ভবনে মদের বারের অনুমোদন দিয়েছেন । ঈমাম ও পরিচালানা কমিটিরকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত গত বছর ১৪ জুলাই মদের বার চালু করার জন্য অনুমতি পত্র প্রদানের পর ফুসে উঠে নগরবাসী। নারায়ণগঞ্জ জেলা নারকোটিকস কর্মকর্তারা পুরো জেলায় মাদকের অসংখ্য আখড়ায় নিজস্ব লোক নিয়োগ করে নিয়মিত মাসোয়ারা আদায় করে আসছে দীর্ঘদিন যাবৎ ।
এর প্রমাণ হিসেবে খোজ নিয়ে জানা যায় শহরের টানবাজার এলাকায় সরকারী অনুমোদনককৃত মদের দোকান লিকো এন্ড সন্স আর সেন এন্ড কোং এর মধ্যে যত টুকু মদ বিক্রি করার কথা তার চাইতে অধিক মদ বিক্রি করছে নানা অসাধু পন্থা ব্যবহার করে ।
কি করে সম্ভব ? এমন প্রশ্নের খোজে অনুসন্ধান চালিয়ে জানা যায়, জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা নিয়মিত মোটা অংকের টাকায় সকল আইনকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে মদের রমরমা কারবার চালিয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর জুড়ে। আর এমন ঘটনায় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা খোদ থানা পুলিশকে নিয়মিত দেয়া হয় মোটা অংকের টাকা । অনুরূপ নারায়ণগঞ্জের কয়েকটি ক্লাবে নিয়মিত মদের আসর পরিচালিত হওয়ায় এলিট নামধারী মদের কারবারী/ সেবনকারীচক্র নিয়মিতই পুলিশের পাশাপাশি নারকোটিকস এর কর্মকর্তাদের নানাভাবে তোষামোদ করে বিনা বাধায় মদের ব্যবসা পরিচালনার জন্য । নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় কয়েকটি মদের আস্তানা থেকে নিয়মিত মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে বিশেষ প্যাকেট সরবরাহ করার কারণে বরাবরই মুখ বন্ধ করে সকল কিছুই হজম করছে এই সংস্থাটি । আইনপ্রয়োগকারী সরকারী এই সংস্থাটি ছাড়াও আরো কয়েকটি সংস্থা একই কায়দায় অপরাধ সাম্রাজ্য চালাতে সহায়তা করে যাচ্ছে বছরজুড়েই ।
সারা বছর জুড়েই মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে নারায়ণগঞ্জ শহরের সমালোচিত ব্লু পেয়ার রেস্টুরেন্টের অন্তরালে জেলাবাসীর চোখে ধুলো দিয়ে কয়েকজন প্রভাবশালী কয়েকজন নেতার সাথে গোপনে আতাঁত করে মদের এই লাইসেন্স প্রদান করে মোহাম্মদ সামছুল আলম । এমন ঘটনায় মদ বিক্রির বার নির্মান কাজ শুরু করার খবরে নূর মসজিদের পরিচালনা কমিটির কর্মকর্তা শিল্পপতি হাজী সিদ্দিকুর রহমান এমন মদের আস্তানার বিরোধীতা করায় তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় শহরের প্রভাবশালী কয়েকটি চক্র । এই চক্রটিকে নেপথ্যে থেকে নানাভাবে আর্থনৈতিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে মদ ব্যবসায়ী গাজী মুক্তার । প্রবল বিরোধীতার পর সিদ্দিকুর রহমানের বিগত দিনের বিতর্কিত নানা ফিরিস্তি তুলে ধরে ক্লাকমেইল করার হুমকি দিলে চুপসে যায় শিল্পপতি সিদ্দিক।
এরপর স্থানীয় প্রশাসন, প্রেসক্লাব, নানা সামাজিক সংগঠনকে ম্যানেজ করতে পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে মদ ব্যবসার সাথে জড়িত স্থানীয় ও চাঁদপুর জেলার একটি প্রভাবশালী চক্র । যাদের ছত্রছায়ায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মুখোষধারী কর্মকর্তা সামছুল আলম মূল ঘটনা ধামাচাপা দিতে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ।
নাম প্রকাশ না কার অনুরোধ করে জেলায় কর্মরত গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন , আজব এক শহরের নাম নারায়ণগঞ্জ ! এই জেলায় টাকা যেমন উড়ে বেড়ায় আবার এই টাকার জন্য এই জেলায় কর্মরত চাকুরীজীবী ছাড়াও নেতাদের মধ্যে অধিকাংশরাই নির্লজ্জের মতো হাত পেতে ঘুষ নিতে কুন্ঠাবোধ করে না । কোন আন্তরিকতা নাই জেলায় দায়িত্বশীল অনেকের মাঝেই । সামছুল আলম নির্লজ্জের মতো টাকা কামিয়ে নিচ্ছে । এমন প্রমাণ বহু রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে । তিনি মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নেন নিয়মিত । তিনি জেলার মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে কি হচ্ছে তা তো জানেন । এখান থেকেও প্রতিমাসে ঘুষ গুনেন নিয়মিত । নারকোটিকস যেন একটি বিশাল বাণিজ্য কেন্দ্র ! তিনি মদের বার অনুমোদন দিয়ে যেমন টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তেমনি তার মতো অনেকেই এই বার থেকে আগাম ঘুষ নিয়েছেন সাংবাদিকদের ম্যানেজের নাম করে । এগুলি সকলেই একই চক্র । সালাম নামের এক সাংবাদিকের নাম বারবারই এসেছে তদন্তে । সালামও ২৫ লাখ টাকা নিয়েছেন মদের আস্তানা ও বাড়ীর মালিকের কাছ থেকে । টাকা যেখানে কথা বলে সেখানে মসজিদ, বিদ্যালয় আর অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের কি ই বা করার থাকে ! এই চক্র ভেঙ্গে ফেলা খুব কঠিন । তাই অচিরেই উদ্ভোধন হচ্ছে মদের এই আস্তানা ।
Discussion about this post