নারায়ণগঞ্জ শহরের মেট্রো সিনেমা হল সংলগ্ন জেলা গোয়েন্দা কার্যালয়ে যে সকল কর্মকর্তা লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে পোষ্টিং করিয়ে যোগদানের সাথে সাথে নিজস্ব বাহিনী/গাড়ী নিয়ে সারাদিন – সারাক্ষণ জেলাব্যাপী চষে বেড়াতো কমপক্ষে ৫/৭টি কালোগ্লাসযুক্ত মাইক্রোবাস । প্রতি মুহুর্তে আটক করে আনার পর শুরু হতো টর্চার । এরপর দর কষাকষির পর অধিকাংশদের ছাড়া হতো নইলে টর্চারের পর মামলা দিয়ে পাঠানো হতো কারাগারে । মেট্রো সিনেমা হল সংলগ্ন ডিবি কার্যালয়ে এমন টর্চারের পাশাপাশি চমকপ্রদ অভিযানও চালাতো কোন কোন পুলিশ কর্মকর্তা । তবে নারায়ণগঞ্জ ডিবির কার্যক্রমের অপর নাম টর্চার বলেই জানেন জেলাবাসী । এবার নতুন পুলিশ সুপারের দৃঢ় বক্তব্যে আশাবাদী হয়ে উঠেছে নিরীহ ভুক্তভোগীদের অনেকেই
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
রূপগঞ্জে এক দম্পতিকে পুলিশ ফাঁড়িতে আটকে রেখে চাঁদা দাবির অভিযোগে ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ শফিকুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এছাড়া এই কর্মতার ফুফাতো ভাই হুমায়ূন হোসেন সহ দুইজনের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায়
বুধবার(১ জানুয়ারি) বিকেলে ভুক্তভোগী আজিজুল ইসলাম সুজন বাদি হয়ে একটি মামলা করেন।
এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান জানান, অন্যায়কারী যে-ই হোক না কেন, পুলিশ প্রশাসন কাউকে ছাড় দেবে না।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ভোলাব ইউনিয়নের চাঁন মিয়ার ছেলে আজিজুল ইসলাম সুজন ও তার স্ত্রী কাঞ্চন এলাকার হানিফ হুজুরের বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করে আসছেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তার অন্তসত্তা স্ত্রী রোজিনা বেগমকে কাঞ্চন বাজারের নুপুর ফার্মেসীতে ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় ফিরছিলেন আজিজুল।তারা কালাদী বাসস্ট্যান্ডে পৌছুলে ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শফিকুল ইসলামের ভাই হুমায়ূন হোসেন ও তার সহযোগী আলামিন নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে ঐ দম্পতিকে জোরপূর্বক কাঞ্চন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের কক্ষে নিয়ে আটকে রাখে। পরে তাদের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।
আজিজুল চাঁদার টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাদেরকে ১০০পিছ ইয়াবা দিয়ে মামলা দেওয়ার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে ইনচার্জের ভাই ও তার সহযোগীরা ভুক্তভোগী আজিজুল ইসলামকে বেধড়ক পেটায় এবং তার অন্তসত্তা স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে আজিজুল ইসলাম সুজন তার মা হাসনারা বেগমকে খবর দিলে তিনি পুলিশ ফাঁড়িতে আসেন।
পুলিশ পরিচয়দানকারী ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জের ভাই চাঁদাবাজ হুমায়ূন হোসেন ও আলামিন মিলিত হয়ে হাসনারা বেগমকেও ইনচার্জের কক্ষের ভিতরে নিয়ে যায়। পরে হাসনারা বেগম ৩৫ হাজার টাকার বিনিময়ে তার ছেলে ও ছেলের অন্তঃসত্তা স্ত্রীকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান।।
এসময় ভুয়া পুলিশ পরিচয়দানকারীরা এই ঘটনা নিয়ে জানাজানি হলে তাদেরকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি প্রদান করেন।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে পুলিশের এক সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নারায়ণগঞ্জ ডিবি তে দারোগা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে এই শফিকুল তার ভাই ও নিকটাত্মীয়দের এনে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ডিবি কার্যালয়কে টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করতো। একই কায়দায় রূপগঞ্জ থানার ভোলাবো তদন্ত কেন্দ্রে যোগদানের ২ মাসের মধ্যেই টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করে দিয়েছে ভাই ও নিকটাত্মীয়দের মাধ্যমে ।
Discussion about this post