নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলে সন্তুষ্ট না হয়ে সারাদেশে এক লাখ ৬৫ হাজার ৬৫৮ জন শিক্ষার্থী তাদের উত্তরপত্র পুনঃমূল্যায়নের জন্য আবেদন করেছে। এসএসসিতে পরীক্ষার খাতা চ্যালেঞ্জ করে এটি রেকর্ড সংখ্যক আবেদন বলে জানা গেছে । এমন আবেদনের পরে আবেদনকারীর কাংখিত ফল পাইয়ে দেবার প্রলোভনে ফেলে শিক্ষা বোর্ড থেকে পরিচয় গোপন রেখে হাতিয়ে নিচ্ছে বিভিন্ন অংকের অর্থ ।
বিকাশের মাধ্যমে আবার সরসরি লোক পাঠিয়ে এসএসসি পরীক্ষার কাংখিত ফলাফল পাইয়ে দিতে ৫ হাজার থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত কোন কোন অভিভাবকদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার জোড়ালো অভিযোগ উঠেছে ।
গত বুধ, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ১৭ মে সকালেও ঢাকা বোর্ড থেকে কয়েকটি মুঠোফোনে যোগাযোগ করে প্রার্থীদের কাছে টাকা দাবী করার অভিযোগ পোওয়া গেছে ।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে কয়েকজন অভিভাবক জানান, মোবাইল ফোনের বিভিন্ন নম্বর থেকে ফোন করে প্রথমে প্রার্থীর নাম, নম্বর আবারো নিশ্চিত হয়ে কাংখিত ফলাফল ঠিক করে দেয়া যাবে বলে টাকা দাবী করে । টাকা দিলে ফল পাবেন, নইলে পাবেন না, । কারো কারো কাছে বিকাশের নম্বরও দেয় এই চক্রটি । অভিভাবকদের কেউ কেউ বিকাশে টাকা পাঠায় আবার কেউ কেউ প্রতারণা মনে করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড অফিসের সামনে এসে টাকা দাবীকারীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করতেও দেখা দেছে কয়েকজনকে ।
গত কয়েকদিন যাবৎ এমন টাকা চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বোর্ডের কেউ এ বিষয়ে কোন তথ্য জানেন না বলে জানান ।
জানা গেছে, এবার দশ বোর্ডের মধ্যে ঢাকা বোর্ডে ৫৮ হাজার ৭০ জন, বরিশালে ৮ হাজার ৪৮০ জন, চট্টগ্রামে ১৯ হাজার ১৮৩ জন, দিনাজপুরে ১২ হাজার ৫৪০ জন, রাজশাহীতে ১৫ হাজার ১৭৩ জন, সিলেটে ১০ হাজার ৫৪১ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ১৩ হাজার ২২৬ জন, মাদরাসা বোর্ডে ১১ হাজার ৭৪৫ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ১৬ হাজার ৭০০ জন শিক্ষার্থী খাতা পুনঃমূল্যায়নের আবেদন করেছে।
অন্যদিকে একেকজন শিক্ষার্থী একাধিক বিষয়ের ফলাফল চ্যালেঞ্জের কারণে উত্তরপত্রের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৩৮ হাজার ৬২৯টিতে। এর মধ্যে ঢাকা বোর্ডে এক লাখ ৪০ হাজার ৯২৩টি, বরিশালে ১৫ হাজার ৫২৭টি, চট্টগ্রামে ৪৪ হাজার ২৯৭টি, দিনাজপুরে ২৬ হাজার ৯২৫টি, রাজশাহীতে ৩০ হাজার ২৩১টি, কুমিল্লায় ১৯ হাজার ২৬টি, সিলেটে ১৮ হাজার ৯১০টি, মাদরাসা বোর্ডে ২৩ হাজার ৭২৪টি এবং কারিগরি বোর্ডে ১৯ হাজার ৬৬টি উত্তরপত্র পুনঃমূল্যায়নের আবেদন জমা পড়েছে।
বোর্ড কর্মকর্তারা জানান, পাবলিক পরীক্ষার খাতা পুনঃমূল্যায়নের ক্ষেত্রে সবকটি উত্তরে নম্বর দেয়া হয়েছে কি-না, প্রাপ্ত নম্বর গণনা ঠিক রয়েছে কি-না, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে (কম্পিউটারে ফল প্রণয়নে পাঠযোগ্য ফরম) উত্তোলনে ভুল হয়েছে কি-না এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ওএমআর শিটের বৃত্ত ভরাট ঠিক আছে কি-না এসব বিষয় দেখা হবে। বিষয়গুলো ঠিক থাকলে তবে সেই খাতা নতুন করে মূল্যায়ন করা হবে। তবে টাকা চাওয়ার বিষয়টি তাদের কারো নজরে আসে নাই ।
গত ৬ মে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। ফল প্রকাশের পরদিনই শুরু হয় খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন প্রক্রিয়া। চলে ১৩ মে পর্যন্ত। আবেদনকারীরা ফল জানতে পারবে ২ জুনের মধ্যে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মু. জিয়াউল হকের সাথে টেলিফোনে কয়েকদফা চেষ্টা করলেও তার কোন বক্তব্য পওেয়া যায় নাই ।
Discussion about this post