এমন অভিযোগের বিষয়ে সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেটকে বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর মাজারে পরিবার নিয়ে জেয়ারত করতে যাবার পর আামর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবৎ পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানোর জন্য কাজ করে গেছেন এহসান চেয়ারম্যান । পরে খোজ নিয়ে জানতে পারলাম তিনি রাজাকার পুত্র । তার বারা হাজী মোসলেউদ্দিন কুক্ষাত রাজাকার ছিলেন । তার চাচা শফিউল্লাকে মুক্তিযোদ্ধারা গুলি করে মেরেছে । আর এহসান চেয়ারম্যান রাজাকারের বংশধর হওয়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজার জেয়ারত করার কারণেই আমাকে ফাঁসাতে এই অপকর্ম করেছে ।
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
প্রতিটি নতুন জন্মনিবন্ধনে ‘চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর’ বাধ্যতা মূলক। সেখানে চেয়ারম্যান বলছেন ‘জন্ম নিবন্ধন আইডি ও গোপণ পাসওয়ার্ড সংরক্ষন, নতুন জন্ম নিবন্ধন, পুরাতন জন্ম তথ্য কম্পিউটারে অন্তর্ভূক্তকরণ, সংশোধন ও জন্ম সনদ প্রদানের একমাত্র অথরাইজ পারসন ইউপি সচিব’। তাই অনেকেই বলেছেন, নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে সচিবের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে চেয়ারম্যান।
এমন সংবাদ সেম্মেলনের পর এক প্রতিক্রিয়ায়, আল্লাহর কসম খেয়ে সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ আরো বলেন, ২০১১ সাল থেকেই বিভিন্ন এলাকার জন্ম নিবন্ধন এহসান চেয়ারম্যান করে যাচ্ছেন পরিকল্পিত ভাবেই । এই ঘটনায় আমাকে ফাসাতে গিয়ে কি কি সে করেছে তার বিশাল ফিরিস্তি রয়েছে । আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হওয়ায় আমার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতেই এমনটি করেছেন এহসান । এহসান চেয়ারম্যানের বাবা -চাচা যে রাজাকার তা কে না জানে । আর সে এখন কার কার শেল্টারে কি করে এই রাজাকার তালিকা থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করেছেন তার বিশাল তথ্যও রয়েছে বলে মন্তব্য করেন সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ । দীর্ঘ ৭ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের মুঠোফোনের আলোচনায় এহসান উদ্দিন চেয়ারম্যানের নানা কৃকীত্তি তুলে ধরেন তিনি ।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে বন্দর ইউনিয়ন পরিষদে এক সংবাদ সম্মেলনের পর চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহম্মেদের দিকে আঙ্গুল অনেকে। এর আগে জন্ম নিবন্ধন ফি’র ৩৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তদন্তে এ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় টাকা আদায়সহ ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশও দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন বলেন, ৩৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন ইউপি সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ। সচিবকে সরল মনে বিশ্বাস করেছিলাম। সে আমার সিগনেচার ছাড়াই অনলাইনে বন্দর ইউনিয়ন ছাড়াও সিটি কর্পোরেশন ও অন্যান্য স্থানের লোকেদের নামে জন্মসনদ তৈরি করেছে। যা সম্পর্কে আমি জ্ঞাত ছিলাম না। যেটা আমার উচিত হয়নি। খোঁজ খবর রাখার প্রয়োজন ছিল ।
এহসান উদ্দিন আরো বলেন, ২০১৬ সালের জুলাই মাসে মোহাম্মদ ইউসুফ বন্দর ইউনিয়ন পরিষদ সচিব হিসেবে যোগদান করেন। পূর্বের দায়িত্বে থাকা সচিব শামীমের কাছ থেকে হিসেব বুঝে নেওয়ার পর দায়িত্ব গ্রহন করেন ইউসুফ। ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর অডিট আপত্তি করা হলে পরে স্থানীয় সরকার বিভাগ তদন্তে নামেন। তদন্তে ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ দুই অর্থ বছরের জন্ম নিবন্ধন ও ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত ৬ মাসের ট্রেড লাইসেন্স খাতে আদায়কৃত মোট ৩৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ। আমি এ বিষয়ে ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। মামলাটি পিবিআইতে তদন্তনাধীন রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যানের সাথে উপস্থিত ছিলেন বন্দর ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য চাঁন শরীফ, ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শাহাবুদ্দিন, ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. হাবীবুল্লাহ, ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুর রহিম, ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুস সালাম, ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ইয়াকুব হোসেন, ১,২,৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শাহানাজ বেগম, ৪,৫,৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সুফিয়া বেগম, ৭,৮,৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শামসুন্নাহার ময়না প্রমুখ।
Discussion about this post