নারায়ণগঞ্জবাসীর সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ খাদ্য নিয়ে প্রতারণা করে আসছিলো সুগন্ধা । উচ্চমূল্য নিয়ে খাবারের মান খুব ভালো বলে নানাভাবে প্রচার করার পাশাপাশি অনেক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়মিত মাসোহারা ও বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ করায় অনেক সংস্থা ই সুগন্ধা বেকার, সুগন্ধা প্লাস, সুইট, সুগন্ধা কেক হাউজের বিরুদ্ধে নিয়মিত কোন ব্যবস্থা নিতো না । এরপরও আজ মংগলবার ১৪ জুলাই দুপুরে শহরের গলাচিপা এলাকার সুগন্ধার কারখানায় অভিযান চালিয়ে দেখা যায় লোমহর্ষক ভয়ংকর চিত্র । এমন অভিযানের খবরে শহরবাসী সাধুবাদ জানালেও জব্দ করা ভেজাল খাদ্য সামগ্রী সুগন্ধা কর্তৃপক্ষের কাছে জিম্মায় রাখার ঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে ।
নারায়ণগঞ্জে সুগন্ধা বেকারীকে খাদ্যে ভেজাল,কেমিক্যাল মিশ্রন সহ নানান অভিযোগে ৪ লাখ টাকা জরিমানা ও ১২৫০ কেজি সেমাই জব্দ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ।
মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় গোপন সংবাদের ভিক্তিতে এনএসআই, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সুগন্ধা বেকারীতে অভিযান চালিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৩৭,৪২,৪৫,৪৯ ও৫১ ধারায় পন্যে মোড়ক ব্যবহার না করা,খাদ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রণ, প্রতিশ্রুত পন্য সঠিক সময়ে বিক্রয় না করা,কারচুপি ও মেয়াদ উর্ত্তীন পন্য বিক্রয় করায় ৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
এদিকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ’র ভেজাল বিরোধী অভিযানে সুগন্ধা বেকারীতে সেমাই ও ক্যামিকেল জব্দ করলেও সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে খাদ্যে মিশ্রিত ক্যামিকেলগুলো ফেলে দিলেও প্রায় সাড়ে ১৭শ’ কেজি ভেজাল সেমাইগুলো সেই সুগন্ধা বেকারীতে রেখে আসেন অভিযানিক টিমের সদস্যরা।
এ বিষয়ে সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকরা জানতে চান এটা কি “শিয়ালের কাছে মুরগি বর্গা” দেয়ার মত হলো কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জের উপ পরিচালক মোঃ সেলিমুজ্জামান বলেন,”আমরা একটি সাদা কাগজে মালিকের স্বাক্ষর নিয়েছি এটা তিনি তার জিম্মায় রাখবেন।”
পরবর্তীতে আমরা দেখবো। কিন্তু একটি ১০ ফুট বাই ৫ ফুটের ডিপ ফ্রিজের ভেতরে প্রায় ৬/৭শ’ কেক তৈরীর আইসক্রিম রয়েছে যার কোন উৎপাদনের তারিখ এবং মেয়াদ ও আমদানী কারকের কিছুই নেই এগুলো কি করবে ? এমন প্রশ্নের জবাবটি তিনি এড়িয়ে যায় এবং সাংবাদিকদের সামনে তিনি সুগন্ধা বেকারীর মালিক নুরুল হক আনসারীকে সান্তনাসুচক হুমকী দেন, ভবিষ্যতে আপনার কারখানা সিলগালা করে দেয়া হবে। অপরদিকে প্রায় সাড়ে ১৭শ’ কেজি ভেজাল সেমাই থেকে মাত্র সাড়ে ১২শ’ কেজি সেমাইকে জব্দ করায় উপস্থিত অনেকের মাঝেই সন্দেহের দানা বেধেছে। রাস্তায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবকালে চোরের কাছে চেরাই পন্য রাখাকে অনেকেই বলেন এ যেন “শিয়ালের কাছে মুরগি বর্গা” রাখা ছাড়া অন্য কিছুই নয়।
অভিযান পরিচালনা কালে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জের উপ পরিচালক মোঃ সেলিমুজ্জামান,এনএসআইয়ের প্রতিনিধি, সদর উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর শাহজাহান হাওলাদার প্রমুখ।
Discussion about this post