বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জেল থেকে বের হলে এই সরকারের অস্তিত্ব থাকবে না। আওয়ামী লীগ খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মারতে চায়। জনগণকে ভোটের অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকার, মৌলিক অধিকারসহ সব অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। দেশে আমরা পরাধীন নাগরিক হিসেবে বসবাস করছি।’
সোমবার (১ জুলাই) শহরের চাষাঢ়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এসব কথা বলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘বাংলাদেশে খুনের মামলার আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান। ফাঁসির মামলার আসামিরও জামিন হয়েছে। আমাদেরও জামিন হয়, একমাত্র খালেদা জিয়ার জামিন হয় না। প্রতিবেশীদের সন্তুষ্ট করতে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁকে জেলে আটকে রেখে তিলে তিলে মারতে চায় আওয়ামী লীগ। খালেদা জিয়া অসুস্থ হলেও সরকারের ষড়যন্ত্রে তাঁকে অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে সহায়তা করা হয়নি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে জেলে আটকে রাখা কত বড় দৃষ্টতা, কত বড় অবিচার – সময় আসলে টের পাইবেন।’
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে ৪৯টি চুক্তি হয়েছে উল্লেখ করে গয়েশ্বর রায় বলেন, একটি চুক্তিও শেখ হাসিনা পার্লামেন্টে আলোচনা করেননি, জনগণকে অন্ধকারে রেখে চুক্তি করা হয়েছে।
সরকারের দুর্নীতি–লুটপাট ‘আলিবাবা চল্লিশ চোর’কে হার মানিয়েছে উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সরকার বিদেশে ভিক্ষা করে, রিজার্ভে টাকা নাই, জনগণের ওপর ট্যাক্স বসায়। আওয়ামী লীগ (নেতারা) এই ১৬-১৭ বছরে যা কামিয়েছেন, এগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেন। এক টাকাও ট্যাক্স বাড়ানোর দরকার নাই।’
স্বাস্থ্য খাতের অবস্থা করোনার চেয়ে খারাপ উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘তারা বিশাল একটা বাজেট করেছে! বাজেট মানেই তো চুরি, প্রকল্প মানেই চুরি। কোন কোন জায়গায় ৫০ পারসেন্ট পর্যন্ত লুটপাট। উন্নয়নের নামে এই সরকার লুটপাট করে টাকা খায়, তারা বালিশ কেলেঙ্কারি, পর্দা কেলেঙ্কারি করে। যেদিকে তাকাবেন, চুরি আর চুরি, ডাকাতি।’
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুকসহ অনস্যান্য নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে গয়েশ্বর রায় সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হলেও এখন আমরা দিল্লির গোলামি করি। বাংলাদেশটাকে কলোনি বানানোর ষড়যন্ত্র চলছে। যদি এই সরকারকে বিদায় না দিতে পারেন, তাহলে বাংলাদেশ নামক দেশটির নাম মানচিত্রে থাকবে না। যারা ভোট চুরি করে, এমপি হয়, লুটপাট করে, তাদের জনগণের সামনে যেদিন দাঁড় করাতে পারব, সেদিন আপনার–আমার বিচার করতে হবে না, জনগণই যথেষ্ট । জনগণের মাইর, দুনিয়ার বাইর। সুতরাং এই পুলিশ, মামলা, এসব হুমকি–ধমকি বাদ দেন। ভোট চুরি করছেন, কইতে না পারেন, চুরির মাল ফেরত দেন। জনগণ মাফ করলে করতে পারে। বিদেশি খুঁটির জোরে যত বেশি দিন ক্ষমতায় থাকবেন, ভবিষ্যতে তত বেশি ভোগান্তি পোহাতে হবে।’
এ সময় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন।
Discussion about this post