চাঞ্চল্যকর বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ (২৪) হত্যা মামলার অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দালিখের জন্য ২১ জুন দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বুধবার (২৪ মে) মামলার অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এজন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শান্ত ইসলাম মল্লিক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। গত ১৬ এপ্রিল বাদীর নারাজি গ্রহণ করে সিআইডিকে অধিকতর তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলে নির্দেশ দেন আদালত।
২০২২ সালের ৭ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিন নূর পরশের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। এ ঘটনায় আমাতুল্লাহ বুশরাসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রামপুরা থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন ফারদিনের বাবা নূরউদ্দিন রানা। মামলার পর ওই বছরের ১০ নভেম্বর রাজধানীর রামপুরা এলাকার একটি বাসা থেকে বান্ধবী বুশরাকে গ্রেফতার করা হয়। এ মামলায় আদালত তার পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড শেষে ১৬ নভেম্বর আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর গত ৫ জানুয়ারি বুশরার পক্ষে তার আইনজীবী জামিন চেয়ে শুনানি করেন।
এসময় মামলার বাদী ফারদিনের বাবা নূরউদ্দিন রানা উপস্থিত ছিলেন। শুনানিতে বাদী পক্ষের আইনজীবী শামীম হাসান জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে গত ৮ জানুয়ারি ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তেহসিন ইফতার আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর গত ১০ জানুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান।
ফারদিন নূর পরশ হত্যা মামলার ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চনপাড়া বস্তি ঘিরে নানা নাটকীয় ঘটনার জন্ম দেয় বিভিন্ন সংস্থা। এছাড়াও রাজনৈতিক প্রভাবশালী চক্রের বিশাল প্রভার থাকার অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন যাবৎ। শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিন নূর পরশের লাশ উদ্ধারের পর নারায়ণগঞ্জে জেনারেল হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে আবাসিক ম্যাডিকেল অফিসার ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যম কে বলেছিলেন, “অবশ্যই ধারালো কোন অস্ত্র দিয়ে ফারদিন নূর পরশকে হত্যা করা হয়েছে । আলামত পাওয়া গেছে লাশের মাথায় ও শরীরে।”
এরপর ধীরে ধীরে দৃশ্যপট পাল্টে যায় অজ্ঞাত কারণে । পরবর্তীতে এই ঘটনায় ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন ও আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার আর কোন মন্তব্য করেন নাই এবং ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন নিয়েও নানা লুকোচুরির জন্ম দেয়। ফারদিন নূর পরশের লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের দুইদিন পূর্ব থেকেই ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন ও আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার দুইজনই ছিলেন লোকচক্ষার আড়ালে। এই দুই কর্মকর্তাদের অসংখ্যবার ফোনে কিংবা নিজ নিজ কার্যালয়ে অসংখ্যবার খোজ করেও তাদের হদিস পাওয়া যায় নাই । তবে তৎসময়ে চাউর ছিলো একটি গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ এক কর্মকর্তার কঠোর আদেশে নিজেদেরকে আড়ালে রেখেছিলেন ওই দুই কর্তা। আর এই কারণে সন্দেহের তীর আরো মরাত্মক আকার ধারণ করে।
Discussion about this post