বিতর্ক ছাড়া যেন কোন সভা সমাবেশ করতেই পারে না নারায়ণগঞ্জ জেলা বকংবা মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা। শহরের খানপুর থেকে পদযাত্রা কর্মসূচির শুরুতেই বিতর্ক। নারায়ণগঞ্জ ৩শ শয্যা হাসপাতালের সামনে মাইকিং করে শুরু হয় বিএনপির এই কর্মসূচী। প্রায় শতাধিক গুরুতর অসুস্থ্য নারী পুরুষ শিশু হাসপাতালের বিছানায় ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে এমন খবর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বিজ্ঞ আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান এবং মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব বিজ্ঞ আইনজীবী আবু আল ইউসুফ খান টিপু খুব ভালো করে জানলেও ঠিক কি কারণে এই হাসপাতালের সামনে মাইকিং করে সমাবেশ করলো তা কেউ বলতে পারেন নাই।
এমন কান্ডজ্ঞানহীন সমাবেশের পর আবার মারামারির ঘটনায় অনেক বিএনপির নেতাকর্মী জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে অভিযোগ করতে চাইলেও নিজেদের নাম প্রকাশ হওয়ার ভয়ে আর কেউ অভিযোগ করার সাহস করে নাই ।
তবে গোয়েন্দা সংস্থার অনেক সদস্য এমন ঘটনাকে স্থানীয় আইনশৃংখলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণেই ঘটেছে বলে জোড় দাবী করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার (২৩) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর এলাকায় আয়োজিত পদযাত্রা কর্মসূচি শুরুর আগে এমন ঘটনা ঘটে। পদযাত্রা শেষে আবার শহরের মিশনপাড়া এলাকায় ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন নেতাকর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১০ দফা দাবিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়। তারই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার বিকেলে শহরের খানপুর এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। সেই সঙ্গে পদযাত্রা পূর্ববর্তী সমাবেশে বক্তব্য শুরু হয়।
আর এই বক্তব্য চলাকালে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের পদপ্রত্যাশী নেতা মাজহারুল ইসলাম জোসেফ সমাবেশস্থলে মিছিল নিয়ে আসেন। মিছিল নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাকে থামাতে যান মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহেদ আহমেদ। এ নিয়ে দুইপক্ষের অনুসারীদের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরে অন্য নেতারা এগিয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
একই সময়ে সমাবেশস্থলে রিজভী আসলে তার পাশে দাঁড়ানো নিয়ে বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ এবং আড়াইহাজার থানা বিএনপি নেতা মাহবুবুর রহমান সুমনের লোকজনদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ঘটে। তখন সুমনের পক্ষে যুবদলের জেলার সদস্যসচিব মশিউর রহমান রনির লোকজন আজাদের লোকজনদের ওপর চড়াও হলে শুরু হয় ফের মারামারি। প্রধান অতিথি রুহুল কবির রিজভী মাইক হাতে নিয়ে তাদের থামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ওই ঘটনার পর শহরের মিশনপাড়ায় আবার আজাদ ও রাজীবের লোকজনদের সঙ্গে রনির লোকজনদের কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আমাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের লোকজন প্রবেশ করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি নেতাকর্মীদের বলবো, এ বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য।
এ বিষয়ে রুহুল কবির রিজভী বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, আমি দেখেছি কারা কারা বিশৃঙ্খলা ঘটিয়েছেন। এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মোহাম্মদ নাজমুল হাসান বলেন, শুনেছি তাদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Discussion about this post