আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবণতি এবং ঢিলেতালে থাকায় একের পর এক হত্যাকান্ডের পর এবার দিনে দুপুরে ফতুল্লায় ১ লাখ টাকা মুক্তিপণের জন্য রাসেল (৪০) নামে এক সিএনজি চালককে অপহরণ করে অপরাধী সন্ত্রাসীরা। এমন অপহরণের ৯ ঘণ্টা পর অপহরণকারীদের কবল থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করেছে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ।
এ সময় অপহরণকারীচক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় রোববার (২৬ মার্চ) দুপুরে অপহৃতের ভাই বাদী হয়ে গ্রেফতাকৃত দুই যুবকসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪-৫ জনকে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
এর আগে, শনিবার (২৫ মার্চ) রাত নয়টার দিকে ফতুল্লা মডেল থানার শাসনগাঁও শামীম তালুকদারের মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে অপহৃত সিএনজি চালক রাসেলকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধারসহ গ্রেফতার করে অপহরণকারী নুর হোসেন ও হাবিবকে। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় আরো ৩-৪ জন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো ফতুল্লা মডেল থানার এনায়েত নগরের সরদার বাড়ির মো. আকবর সরদারের ছেলে নুর হোসেন সরদার (৪২) ও হাসান আলীর ছেলে হাবিব সরদার (২৫)।
অপহৃত সিএনজি চালক রাসেল ফতুল্লা মডেল থানার ধর্মগঞ্জের জলিল মিয়ার ছেলে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, বাদীর ভাই রাসেল একজন সিএনজি চালক। শনিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে পঞ্চবটী কস্তরি হোটেলের সামনে আসামাত্র অভিযুক্তরা তার ভাইকে জোড় পূর্বক একটি অটো রিকশায় তুলে অপহরণ করে। পরবর্তীতে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অপহৃতের মোবাইল থেকে বাদীকে ফোন করে এক লাখ টাকা দাবি করে। অন্যথায় অপহৃত সিএনজি চালককে বড় ধরনের ক্ষতি সাধন করবে বলে হুমকি দেয়। পরবর্তীতে বাদী ৫০ হাজার টাকা প্রদান করার কথা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত নুর হোসেন জানায় টাকা শাসনগাঁও শাহী মসজিদের সামনে নিয়ে এলে টাকা পেয়ে তার ভাইকে ছেড়ে দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে বাদী পুলিশের সহায়তা নিলে পুলিশ কৌশল অবলম্বন করে ছদ্মবেশ ধারণ করে টাকা দিয়ে শাহি মসজিদ গলিতে পাঠায়। এ সময় গ্রেফতারকৃত হাবিব টাকা নিতে এলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতাকৃত হাবিবের স্বীকারোক্তি মতে শামীম তালুকদারের মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় একটি রুমে গিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় অপহৃত সিএনজি চালককে উদ্ধারসহ গ্রেফতার করে নুর হোসেন নামক এক অপহরণকারীকে। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আরও ৩-৪ জন অপহরণকারী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক গিয়াস উদ্দিন জানায়, বাদীর নিকট থেকে অভিযোগ পেয়ে কৌশল অবলম্বন করে আমরা প্রথমে হাবিব নামক এক অপহরণকারীকে গ্রেফতার করি। পরে তার দেখানো মতে একটি মার্কেটের দ্বিতীয় তলা থেকে অপহৃত সিএনজি চালককে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধারসহ সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয় নুর হোসেন নামক অপর একজনকে। ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ে সিএনজি চালককে অপহরণ করা হয়। এবং সিএনজি চালকের সাথে ২৮ হাজার ৫’শ টাকা অপহরণকারীরা নিয়ে যায়। জড়িত অপর পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
Discussion about this post