নিজস্ব প্রতিবেদক
ক্রাইজোন জিমখানা। প্রায় ২৪ ঘন্টাই মন্ডলপাড়া ব্রীজ, জিমখানার উভয় পাশের গলি, টানবাজার পুরাতন হংস হলের ব্রীজ ও স্বর্ণপট্টির সামনে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সামনে, জল্লারপাড়া এবং ডিআইটি ওষুধ মার্কেটের সামনে পালাক্রমে পুলিশ উপস্থিতি সকলের নজরে পরলেও এই অঞ্চলের সকল ধরণের অপরাধ যেন ওপেন সিক্রেট। এমন অপরাধ সাম্রাজ্য কোন অবস্থাতেই নিয়ন্ত্রণে আসে না। চাউর রয়েছে এই জিমখানা থেকে প্রতিদিন বিশেষ পন্থায় তৈরী করা গাজার সিগারেট জেলার শীর্ষ নেতাদের জন্য সরবরাহ করায় এই অপরাধীদের সাহস যেন আকাশচুম্বি।
ভাড়ায় অস্ত্র সরবরাহ, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা, জুয়ার আখড়াসহ সকল ধরণের অপরাধ যেন এই ক্রাইমজোন জিমখানায় প্রতি মুহূর্তে মুহূর্তে ঘটেই যাচ্ছে । কাকডাকা ভোর কিংবা দুপুর এমন কোন সময় নাই যে সময়ে এই অপরাধীরা বিরতি দিয়ে স্বস্তিতে থাকতে দেয় না নগরবাসীকে।
এমন ভয়ংকর মাদক ব্যবসার বিরোধকে কেন্দ্র করে শহরের জিমখানা মন্ডলপাড়ায় এলাকার দুই গ্রুপের মধ্যে সংর্ঘষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনানোসহ একজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, অস্ত্রসহ হামলা চালিয়েছে জিমখানার শাহ আলম বাহিনী।
শনিবার (২৫ মার্চ) রাত নয়টার দিকে মন্ডলপাড়ায় এলাকার র্যালি বাগানের গলি ও গণবিদ্যা নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়ে সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ওই যুবকের নাম আবির হোসেন। তিনি র্যালী বাগান এলাকার ছেলে আক্তার হোসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত নয়টার জিমখানার শাহ আলম বাহিনীর প্রধান মাদক কারবারি আলেক জেন্ডারের ছেলে তানভীরের নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৫০ জন যুবক হাতে অস্ত্রসহ মন্ডলপাড়া পুলে আসে। এসয় তারা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে এক গ্রুপ র্যালি বাগানের গলির সামনে অবস্থান নেয়। অপর গ্রুপ গণবিদ্যা নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়ে ভেতর দিয়ে প্রবেশ করে। এসময় অনন্ত ১০টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। তখন সামনে যাকে পায় তাকেই কুপিয়ে আহত করে। কিছুক্ষণ পর র্যালী বাগানের ভেতর থেকে আরেক দল বাইরে এসে তাদের ধাওয়া দিলে সংর্ঘষ বাঁধে।
মন্ডলপাড়ার কয়েকজন ওষুধের দোকানী জানান, মুর্হুতের মধ্যে পুরো এলাকায় আতষ্ক ছড়িয়ে পড়েছ। ওই যুবকদের হাতে রামদা, তলোয়াল, ছুড়ি, চাকু , চাপাতি ও অস্ত্র ছিলো। তারা র্যালী বাগানের গলির ভেতরে প্রবেশের সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ করে। তখন ভয়ে আশপাশের মানুষ দৌড়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করে। ওষুধের দোকানীরাও দোকানের সাটার লাগিয়ে দেয়। পরে পুলিশের গাড়ির শব্দ শুনে জিমখানার দিকে পালিয়ে যায় যুবকরা।
আহত আবিরের মা আমেনা বেগম বলেন, শুক্রবার রাতে সাড়ে তিনটার দিকে আবির সেহারী খেয়ে বাহিরে বের হয়। ওই সময় র্যালী বাগানের ভেতরে মাদক বিক্রি করতে আসে জিমখানার তানভীর সোহেল, আকাশ, আল আমিন, শহিদুল, হাবু। তখন তাদের এলাকা থেকে বেড়িয়ে যেতে বলায় আমার ছেলেকে কুপিয়ে আহত করে। আবির চিৎকার দিলে ওরা পালিয়ে যায়। সন্ধ্যায় তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করায় রাতে জিমখানার, শাহ আলম ও তানভীরসহ অর্ধশত লোকজন অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে বাগানে হামলা করে। আমার বাড়িঘর ভাঙচুরসহ তাদের সামনে যাকে পেয়েছে তাকেই কুপিয়ে আহত করেছে।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আনিচুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, মন্ডলপাড়া পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ সেখানে কাজ করছে। যারা ঘটনার সাথে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। শাহ আলম ও তানভীরের বিরুদ্ধে মাদকসহ একাধিক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে ৷
Discussion about this post