বিশাল আয়োজনের মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার লিংক রোডের পাশে সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে ওঠা শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। তিতাস, পরিবেশ ও বিআইডব্লিউটিএ যে ভঙ্গিমায় ঢাকডোল পিটিয়ে নানা পন্থায় বিতর্ক সৃষ্টি করে উচ্ছেদ অভিযান চালায় ঠিক একই ভঙ্গিমায় উচ্ছেদ অভিযান করায় সমালোচনার মুখে পরেছে সড়ক ও জনপথ (স ও জ) ।
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট কে এম ইশমামের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) দুপুর বারোটা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পূর্ব পাশে এবিসি ইন্টারন্যাশনার স্কুলের উত্তর ও দক্ষিন পাশে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় শতাধিক অবৈধ দোকানপাটসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠানের আধা পাকা ও সেমিপাকা স্থাপনা ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়।
আইন শৃংখলা বাহিনীর সহযোগিতায় পরিচালিত এই উচ্ছেদ অভিযানে ডিপিডিসি ও ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি সরকারি সংস্থা সহযোগিতা করে।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট কে এম ইশমাম জানান, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের দু’পাশে বিপুল পরিমাণ জায়গা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নামে অধিগ্রহণ করা হয়। তবে জায়গাগুলো দীর্ঘদিন যাবত স্থানীয় প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে ভোগ দখল করে আসছিল। সড়কটি ছয় লেনে উন্নীতকরণ ও সংস্কার কাজে জায়গাগুলো ব্যবহারের প্রয়োজন হওয়ায় অবৈধ দখল থেকে পুন:রুদ্ধার করতে উচ্ছেদ করা হয়েছে। জায়গাগুলো পুরোপুরি অবৈধ দখলমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলমান থাকবে।
উচ্ছদ শুরুর পূর্বেই বিশেষ পেশার ক্যামেরাম্যানদের উপস্থিতি, নাস্তার আয়োজন, দুপুরের খাবারের আয়োজন / প্যাকেট বিতরণ ও বিকাশ এবং নগদ অর্থনৈতিক লেনদেনের দৃশ্য দেখে অনেকেই মন্তব্য করেছেন এখানে তিতাস, পরিবেশ ও বিআইডব্লিউটিএ যে ভঙ্গিমায় নাটক মঞ্চায়ণ করে সেই ভঙ্গিমায় উচ্ছেদ করেছ স ও জ।
এদিকে, সড়কের পাশে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে নিত্যদিনের যানজটের ভোগান্তি থেকে মানুষকে রেহাই দিতে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করার কথা জানান সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো: সাখাওয়াত হোসেন শামীম। অবৈধ দখল থেকে অবমুক্ত করা জায়গায় অচিরেই কয়েকটি পার্কিং জোন নির্মাণ করে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং রোধ করা হবে বলে জানান তিনি।
এমন উচ্ছেদের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, “উচ্ছেদ হওয়া প্রায় সকলেই আমরা ভাড়াটিয়া। পিছনের জমির মালিকরাই এই দোকান কারখানা তৈরী করে ভাড়া দিয়েছেন । হঠাৎ করে গতকাল বুধবার এই জমি মাপ দিয়ে যায় সরকারী লোকজন। কি কারণে এই মাপঝোপ তাও কেউ কিছু কয় নাই। আজ সকালে আবার হঠাৎ করেই কোন নোটিশ না দিয়েই সকাল থেইক্কা বুলডেজার দিয়া ভাইঙ্গা গুরাইয়া দেয় শত শত দোকান কারখানা গোডাউন।
যারা ভাড়া নেয় তাদের ফোন দিছি তারা কেউ আসে নাই । তাইলে তো এই জমি সরকারী এটি সত্যিই নইলে তারা এই জমি উচ্ছেদ করবো কে ? এতে তো আমাদের বিশাল ক্ষতি হইয়া গেলো। সময়ও পাইলাম না মালামাল রক্ষা করার। আবার শুনতেছি এই জমির পাশের এবিসি ইন্টারন্যাশনার স্কুলের গাড়ী রাখতেই বিশাল উচ্ছেদ আয়োজন করা হইছে । এই স্কুল নাকি খুব প্রভাবশালীরা মালিক। এই স্কুলে নাকি বড় বড় নেতা, বড় বড় সরকারী কর্মকর্তাদের পোলাপাইন লেখাপড়া করে। এই স্কুলটি যখন চাষাড়ায় ছিলো তখন শত শত প্রাইভেট গাড়ি যানজট লাগাইয়া ই রাখতো। সস্তাপুরে এই স্কুল আসার পরে একইভাবে মূল সড়কের উপর শত শত প্রাইভেট গাড়ি রেখে যানজট লাগাইয়্যাই রাখে। আর এই স্কুলের পাশে পুলিশ প্রায়ই ডিউটি করতে দেখি যাতে সাধারণ মানুষ এই স্কুলের গাড়ীর যানজটে প্রতিবাদ করতে না পারে।
তাদের ওই গাড়ী রাখতেই নাকি সড়ক ও জনপথ বিভাগ এমন উচ্ছেদ করা হইছে শত শত দোকান কারখানা গোডাউন। নইলে সড়ক ও জনপথের (স ও জ) জমি বিনা ভাড়ায় ঠিকাদারকে সুবিধা দিয়ে লুটপাট করছে অসাধুরা । সেখানে এই জমি এতো হুটহাট উচ্ছেদ করলো কি কারণে ?
Discussion about this post