বাহ কি চমৎকার ! বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে দেশের রাজনীতিতে জামায়াত শিবির কি করেছে তার হিসাব বলে বা লিখে শেষ করা যাবে না। অত্যান্ত কৌশলে এই জামায়াত শিবির বিএনপির কাঁধে ভর করে তাদের সকল ফায়দা হাতিয়ে দিয়েছে জেট সরকারের শাসনামলে।
বাড়ী গাড়ীতে জাতীয় পতাকা উঠিয়ে দেশ বিরোধী রাজাকার চক্র মুক্তিযোদ্ধাদের বুকের উপর দিয়ে চষে বেড়িয়েছে পুরো দেশে। সেই কষ্ঠে অনেক মুক্তিযোদ্ধার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বারংবার । বুকের রক্ত দিয়ে যারা দেশ স্বাধীন করেছে আর সেই দেশ বিরোধীরা দেশ শাসন করেছে আর জাতীয় পতাকা টাঙ্গিয়েছে তাদের বাড়ী – গাড়ীতে তা মেনে নিতে পারে নাই কোন মুক্তিযোদ্ধা।
বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের শাসনামল শেষ হয়েছে ২০০৬ সালে । এরপর আর দেশবিরোধী চক্র রাস্ট্র ক্ষমতায় না থাকলেও সেই জামায়াত শিবির – রাজাকার চক্রের দোষররা কি করছে তার হিসাব সকলেই জানেন। নারায়ণগঞ্জের কুখ্যাত রাজাকার মুক্তিযুদ্ধের সময়ের শান্তি কমিটির সভাপতি নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ার বাসিন্দা গোলাম রব্বানী খান জীবদ্দশায় কি করেছেন তা নগরবাসী খুব ভালো করেই জানেন । ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ রাস্ট্র ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর অনেক রাজাকার ও তাদের দোষররা পালিয়ে গেলেও নারায়ণগঞ্জের রাজাকার চক্র ও তাদের পুত্ররা কি করছেন তা অজানা নয় কারোর ই। খোদ নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের নেতা হিসেবে কুখ্যাত রাজাকার গোলাম রব্বানী খানের পুত্র খালেদ হায়দার খান কাজলকে নিয়ে নগরীর সর্বত্র ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেলেও তাদের থামাতে পারে নাই কেউ ।
শাসক দলের কয়েকজন প্রভাবশালী সংসদ সদস্য এই চক্রদের লালর পালন করছে বলেও খোদ আওয়ামীলীগ নেত্রী নাসিক মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ অনেকেই কড়া সমালোচনা করলেও রাজাকার পুত্রদের আস্ফালন যেন বেড়েই চলেছে ।
এমন নারায়ণগঞ্জের কুখ্যাত রাজাকার পুত্রদের আস্ফালনের ধারাবাহিকতায় এবার আগামীকাল ২২ মার্চ বুধবার সকালে বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায়, কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন খোদ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম মোজাম্মেল হক। এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথে হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নারায়ণগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এ,কে,এম সেলিম ওসমান। এ ছাড়াও এই অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত থাকবেন বন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ রশিদসহ আরো কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থাকবেন।
আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে মন্ত্রী একজন মুক্তিযোদ্ধা, এমপি একজন মুক্তিযোদ্ধা আর চেয়ারম্যানও একজন মুক্তিযোদ্ধা। দেশের বীর সন্তান। আর এই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন একজন কুখ্যাত রাজাকার পুত্র সেলিম রেজা। যার বাবা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার বাহিনীর অন্যতম কুখ্যাত রাজাকার এম.এ ওহাব । নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার কলাগাছিয়া গ্রামের (ইউনিয়ন কলাগাছিয়া) এম. ওহাব ছিলেন একজন পাট-সার ব্যবসায়ী। আর রাজাকারদের অন্যতম সংগঠক ছিলেন এই এমএ ওহাব। মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত ‘মুক্তিযোদ্ধ কোষ‘ এ রয়েছে বিস্তর ইতহাস। ‘মুক্তিযোদ্ধ কোষ‘ থেকেই জানা যায় রাজাকারদের বিশাল ফিরিস্তি। রাজাকারদের এই ইতিহাস মুছে ফেলতে এখনো চলছে নানা চক্রান্ত ।
সেই কুখ্যাত রাজাকার বাহিনী রাস্ট্রক্ষমতায় না থাকলেও মুক্তিযোদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর অনুষ্ঠানে তাদের দোষররা সভাপতিত্ব করেন তা বন্দরের অনেক মুক্তিযোদ্ধারাই মেনে নিতে পারছেন না।
কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে ক্ষোভের সাথে বলেন, ‘একজন রাজাকারের বাচ্চা চাষাড়ার রাইফেল ক্লাবে বসে কি করছে তা সকলেই জানেন। আর কয়েকজন কুখ্যাত রাজাকারের বাচ্চারা বন্দরে কি করছে এটি হলো তার নমুনা। ধিক্কার জানানোর ভাষা পাই না আমরা । কি বলে ধিক্কার জানাবো ? মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রীর অনুষ্ঠানে নাকি সভাপতিত্ব করবে একজন কুখ্যাত রাজাকার পুত্র। ‘চমৎকার ! রাজাকারপুত্রের সভাপতিত্বে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী এমপি ও চেয়ারম্যান অতিথি !’ আশ্চর্য হয়ে এই অনুষ্ঠানের এই চক্করের দিকে তাকিয়ে আছে নারায়ণগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধারা। এমন মন্তব্যও করেন একজন মুক্তিযোদ্ধা।
মুক্তিযোদ্ধাদের এমন ক্ষোভ ও একজন রাজাকার পুত্রের সভাপতিত্বেএই অনুষ্ঠানের বিষয়ে জানতে বন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ রশিদ এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নাই।
Discussion about this post