এবার নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, ‘নারায়ণগঞ্জে এখন অনেকে অনেক বড় বড় কথা বলে। মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা আগরতলা থেকে পালিয়ে এসেছিলেন, লুট করে অনেকে সম্পদ কামিয়েছিলেন। এইখানে অনেক মুক্তিযোদ্ধা তো কামান নাই। অনেকে কামিয়েছিলেন, মানুষের সম্পত্তি দখল করেছেন। চোরের মার বড় গলা বলে একটা কথাই তো আছে। আমি কারও কথার উত্তর দিতে চাই না।’
শুক্রবার (১৭ মার্চ) বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের লক্ষ্মী নারায়ণ কটনমিল উচ্চ বিদ্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও নবীন বরণ উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এইসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘চল্লিশ হাজার টাকার জন্য আমাদের বাড়ি নিলাম হয়ে গেল। কত বড় বড় লোক, কত কোটিপতি নারায়ণগঞ্জে, কত লুটেরা, কত বঙ্গবন্ধুর নাম বেচে পয়সা কামানো মানুষ, কথায় কথায় যারা রূপ বদলিয়ে কখনও কাক, কখনও কোকিল হয় তারা কেউ আগাইয়া আসে নাই। শ্রমিকরা এক টাকা করে চাঁদা দিয়ে আমাদের বাড়ি রক্ষা করেছে।’
শামীম ওসমান বলেন, ‘নারায়ণঞ্জে যারা গীবত গান তাদের উদ্দেশ্যে বলবো, এইগুলো করে কোন লাভ হবে না। আমি শামীম ওসমান, প্রমাণসহ উত্তর দেবো। আমার স্বপ্ন নারায়ণগঞ্জকে নতুন বউয়ের মতো সাজাতে চাই।’
সংসদ সদস্য বলেন, ‘আজকে অনেকে অনেক কথা বলছে। নারায়ণগঞ্জে কিছু ঘটনা ঘটেছে এবং ঘটে। আমি নারায়ণগঞ্জের এসপি সাহেবের সাথে কথা বলেছিলাম। গতকাল (বৃহস্পতিবার) কলাগাছিয়াতে একটা ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় যে নেতৃত্ব দিয়েছে সে এক সময় ছাত্রলীগ করতো। সে আমার চেয়েও বয়সে সাত বছরের বড়। আমার বড় ভাই সেলিম ওসমানের বন্ধু ছিল সে। আমি এদের কথা বলেছিলাম, আমি বলেছিলাম আরেকটা গ্রুপের কথা। নিষিদ্ধ পল্লী উঠিয়ে দিয়েছিলাম। নারায়ণগঞ্জের কোন এক মহিলা ওই নিষিদ্ধ পল্লীর নিষিদ্ধ মানুষের নিষিদ্ধ সন্তানকে, যে খুনের মামলার আসামি, বিএনপির নেতা তৈমুর আলম খন্দকারের ভাইকে যে হত্যা করেছিল এই গিয়াসউদ্দিনের নির্দেশে। যেই গিয়াসউদ্দিন এখন অনেক বড় বড় কথা বলছেন। আপনার সম্বন্ধে বলতে গেলে অনেক কিছু বলতে হয়, তাই পরে বলি এইটা। সেই মামলার আসামিকে ঢাকায় আনা হয়েছিল। হয়তোবা টার্গেট শামীম ওসমান থাকতে পারে।’
শামীম ওসমান বলেন, ‘বিএনপির সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে ঢাকায় হত্যার চেষ্টা করা হলো। এইটা করে হত্যার দোষ আমাদের উপর দেওয়া হতো। অনেকেই ত্বকী হত্যা নিয়ে আমাদের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করেন। ষড়যন্ত্র করতে চাইলে করেন, কিন্তু সত্যের সাথে মিথ্যা কখনও পারে না। অত বেশি কথা বইলেন না যাতে আমাদেরও কিছু বলতে হয়।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, নারায়ণগঞ্জ মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান সালমা ওসমান লিপি, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান, ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইফতেখার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।
এমন পাল্টাপাল্টি রাজনীতির ঘটনায় বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের লক্ষ্মী নারায়ণ কটনমিল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে উপস্থিত অনেক অভিভাবক নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বলেন, একদিকে আইভী বলেন শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে আবার শামীম ওসামন একই ভঙ্গিমায় কারো নাম উচ্চারণ না করে আকারে ইঙ্গিতে মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে নানা মন্তব্য করে রাজনৈতিক মাঠ গরম করে চলেছেন । আসলে তারা করছেন টা কি ? লাভ হচ্ছে কার ?
Discussion about this post