নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে চাঞ্চল্যকর হকার জুবায়ের হত্যা মামলায় প্রথম সাক্ষী দিয়েছেন মামলার বাদী নিহতের মা মুক্তা বেগম।
সাক্ষ্য দিতে গিয়ে তিনি ছেলে হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি করে কাঠগড়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েন।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শাম্মি আক্তার সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর জাসমীন আহমেদ জানান, আলোচিত জুবায়ের হোসেন (১৮) হত্যা মামলায় আটজন আসামি। এদের মধ্যে একজন পলাতক রয়েছেন। আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন। আগামী ২১ মার্চ পরবর্তী সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করবেন।
আসামিরা হলেন- ইকবাল ওরফে ডাক্তার, হকার নেতা আসাদুল্লাহ, স্বপন, সায়মন, হাসান, সানি, রাসেল ও মহসিন। তাদের মধ্যে সায়মন ও হাসান কারাগারে বন্দি এবং রাসেল পলাতক রয়েছেন। অন্যরা জামিনে গিয়ে আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
বাদী মুক্তা বেগম বলেন, আমার দুই মেয়ে এক ছেলে ছিল। ছেলেটি মাদ্রাসায় পড়ত। সংসারের আর্থিক সহযোগিতার জন্য আমার একমাত্র ছেলে জুবায়েরকে ফুটপাতে জুতার দোকানে কাজে দেই। আমার সেই সন্তানকে যারা নির্মমভাবে পেটে ছুরিকাঘাত করে হাতের কব্জি কেটে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে- আমি তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই। তাদের বিচার দেখে যেন কেউ আর কারো বুক খালি করতে না পারে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী শহিদুল ইসলাম টিটু বলেন, বাদী সাক্ষ্য দেওয়ার পর তাকে জেরা করেছি। একই সঙ্গে আদালতে ন্যায় বিচারের জন্য প্রার্থনা করেছি।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের ব্যাপটিষ্ট চার্চ (গীর্জা) ও বলাকা পেট্রল পাম্পের সামনে ফুটপাতে দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে হকারদের হাতে জুবায়ের ছুরিকাঘাতে খুন হন। নিহত জুবায়ের ফতুল্লার উত্তর মাসদাইরের আমজাদ হোসেনের পুত্র। এ ঘটনায় নিহত জুবায়েরের মা মুক্তা বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখ করে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
জুবায়ের হত্যাকান্ডের বিষয়ে নগরীতে ব্যাপক প্রচার রয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের এইট চক্রের ইন্দনে পুরো শহরের ফুটপাত দখল করে আসাদ – মহসিনসহ হত্যাকারীরা দীর্ঘদিন যাবৎ চাঁদাবজির মহোৎসব চালিয়ে আসছে। এমন হত্যাকান্ডের আগে ও পরে এই খুনী চক্রের সদস্যরা একেকটি এলাকার একেকজন লাইনম্যান হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে চাঁদা আদায়ের পর রাতেই বন্টন করা হয়। কোন নেতা ফুটপাতের চাঁদাবাজির কত টাকা, পুলিশের কত টাকা বিশেষ পেশার নামধারীদের কত টাকা দিতে হবে তার ফিরিস্তি পূর্ব থেকেই নির্ধারণ করা থাকে।
Discussion about this post