চোরাইকারবারী ও মাদকের প্রধান রুট নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে চাঞ্চল্যকর দুই কন্টেইনার মদ আটকের ঘটনায় এখনো অধরা রয়েছেন মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুখ্রাত মাদক কারবারী আজিজুল ইসলাম ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।
নারায়ণগঞ্জ আদালতের নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র অভিযোগ করছেন, “এতো বড় চাঞ্চল্যকর ঘটনার মূল হোতা মাদক ব্যবসায়ী আজিজুল ইসলাম এখনো অধরা রয়েছে কি করে ? রাজনৈতিক শীর্ষ নেতা ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ আদালতের কোন কোন কর্তারা এই মাদক ব্যবসায়ী আজিজুল ইসলামকে শেল্টার দিচ্ছে ? পুলিশের সাইরেন বাজিয়ে দামি গাড়ীযোগে প্রায়ই মাদক ব্যবসায়ী আজিজুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জ আদালতে আসেন । আবার একই কায়দায় কালো গ্লাসযুক্ত ওই গাড়ীতে করে সাইরেন বাজিয়ে আদালত ত্যাগও করেন ওয়ারেন্ট থাকার পরও।
ঘুষের টাকা লেনদেনের প্রমাণ করা খুবিই কঠিন। তারপরও আদালতের অনেকেই সাধারণ চোখেই বুঝতে পারে মুড়ির মতো ঘুষ ছিটাচ্ছে এই মাদক ব্যবসায়ী আজিজুল ইসলাম । ফলে বীরদর্পে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাক ব্যবসাযী আজিজুল ইসলাম চলাফেরা করছে ।“
বিদেশ থেকে অবৈধভাবে আসা দুই কন্টেইনার মদ উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলার মূল আসামি ইউপি চেয়ারম্যান ও তার ছেলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফারহানা ফেরদৌসের আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
আসামিরা হলেন, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ষোলঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম ও তার ছেলে মিজানুর রহমান আশিক।
আদালত পুলিশের পরির্দশক আসাদুজ্জামান সোমবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে এখন পলাতক রয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম ও তার ছেলে মিজানুর রহমান আশিকসহ এই মামলার অপর আসামীরা ।
মাদকের এই মামলার সকল আসামীরা হলেন- মো. নাজমুল মোল্লা (২৩), সাইফুল ইসলাম (৩৪), মো. আজিজুল ইসলাম (৫৭), মিজানুর রহমান আশিক (২৪), আব্দুল আহাদ (২২), জাফর আহমেদ (৩৫), শামীম (৩২), রায়হান (৩৫), দুবাই প্রবাসী অজ্ঞাত, দিপু (২৮) এবং বাদশা (৩২)।
নারায়ণগঞ্জ আদালতের পুলিশ পরির্দশক আসাদুজ্জামান জানান, ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম ও তার ছেলে মিজানুর রহমান আশিকের বিরুদ্ধে গত ১৮ জানুয়ারি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফারহানা ফেরদৌসের আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। র্যাবের মাদক আইনের মামলায় এই দুই আসামি আদালতের একাধিক শুনানিতে হাজির হয়নি। আদালত দ্রুত তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে আজিজের আরেক ছেলে উচ্চ আদালত থেকে আব্দুল আহাদ জামিনে আছেন।
মামলায় বলা হয়, ‘গত বছরের ২৩ জুলাই বিদেশ থেকে চট্টগ্রাম নৌ বন্দর হয়ে অবৈধভাবে আসা দুটি কন্টেইনারে ৩৭ হাজার বোতল বিদেশি মদ রাজধাীতে প্রবেশ করছিল। পথে সোনারগাঁও টোল প্লাজায় র্যাব-১১ এর একটি দল সেই চালান জব্দ করে। সেখানে পাওয়া যায় ৩৬ হাজার ৮১৬ বোতল বিদেশি মদ। এসবের মূল্য প্রায়া ৩৭ কোটি টাকা।
এ ঘটনায় কন্টেইনারে থাকা দুইজনকে আটক করা হয়। পরদিন বিমানবন্দর এলাকা থেকে র্যাব আটক করে আব্দুল আহাদ কে।
মামলায় র্যাব জানায়, এই চালানের মূল হোতা মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ষোলঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলামসহ তার দুই ছেলে। পরে তারাসহ ১১ জনের নামে সোনারগাঁও থানায় মামলা হয়।
Discussion about this post