নারায়ণগঞ্জ জেলায় ২০১৪ সালে পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী বর্তমান ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম এবার সোনারগাঁয়ে দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আশ্বাস দিয়েছেন খুনিদের বিচার হবেই।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের পরিবারকে সমবেদনা জানান এবং জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের আশ্বাস দেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) চাইলাউ মারমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) তরিকুল ইসলাম, সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আহসান উল্লাহ প্রমুখ।
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনাটি আমাদের খুব মর্মাহত করেছে। বাংলাদেশে আইন আছে। কোনো অপরাধী অপরাধ করে পার পাবে না। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকটি আসামীকে আইনের আওতায় আনা হবে। এসব ঘটনা যখনই ঘটে তখনই আমরা চেষ্টা করে আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করার এবং প্রকৃতপক্ষে কী ঘটনা ঘটেছে তার রহস্য উদঘাটন করে দ্রুত ঘটনার চার্জশিট দিয়ে আসামির শাস্তি নিশ্চিত করি। এর ফলে আগামীতে অন্য কেউ এমন অপরাধ করার সাহস না পায়। আশা করছি, খুব শিগগিরই এই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে পারবো।
এ সময় গুরুতর আহত রফিকুল ইসলামের স্ত্রী সাদিয়া আক্তার বলেন, ‘বাড়ির সামনে ড্রেনের কাজ চলছে। সেই ড্রেনে পাইপ দিতে চেয়েছিল আমার ভাসুর আসলাম সানি। এ নিয়ে তার চাচাতো ভাই মোস্তফা ও তার পরিবারের লোকজন তার সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে মোস্তফার নেতৃত্বে মামুন, মাফিজুল রহমান, মারুফ, চাপাতি, রামদা ও লোহার রড নিয়ে আমার ভাসুরকে (আসলাম) কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। এ কথা শুনে আমার স্বামী ও দেবর সেখানে ছুটে যায়। তাদেরও কুপিয়ে রক্তাক্ত করেছে। পরে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক আমার ভাসুর ও দেবরকে মৃত ঘোষণা করে এবং আমার স্বামীকে গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসা দেওয়া হয়। রাতে তার অপারেশন শেষ হয়েছে।’
সাদিয়া আরও বলেন, ‘জমি নিয়ে আমার চাচাশ্বশুর ও তার ছেলে মোস্তফাসহ আমাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পূর্ববিরোধ রয়েছে। ওরা আমার স্বামীসহ তার তিন ভাইকে হত্যা করার হুমকি দিয়েছিল। এসব নিয়ে বেশ কয়েকবার আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মূলত সেই বিরোধের জের ধরে আজ পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে হত্যাকাণ্ড করেছে।’
রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর ইউনিয়নের পাঁচপাড়া এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সহোদর মো. আসলাম সানি (৪৮) ও শফিকুল ইসলাম রনি (৩৫) খুন হন। এ ঘটনায় রফিকুল ইসলাম (৪০) নামের আরও এক ভাই আহত হন।
পাঁচপাড়া এলাকার ওই তিন ভাইয়ের সঙ্গে চাচা মো. মহিউদ্দিনের দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। তাদের বাড়ির পাশ দিয়ে সরকারি একটি সড়কের ড্রেন করা হচ্ছিল। ওই ড্রেনের জায়গা নিয়েই তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে।
Discussion about this post