১৯৫২ সালে আমি তৃতীয় বর্ষের ছাত্র । ২১/২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা আর্ট গ্রুপের দ্বিতীয় চিত্র প্রদর্শনীর তারিখ ছিল। স্থান ছিল নিমতলীতে পুরোনো জাদুঘর ভবনে। আমার সিনিয়র আমিনুল ইসলাম, বিজন চৌধুরী, দেবদাস চক্রবর্তী; আমার সহপাঠী কাইয়ুম চৌধুরী, রশিদ চৌধুরী, আবদুর রাজ্জাক ছাড়া অন্য ছাত্ররাও ছিল। আমরা সবাই মিলে পাথরের বড় বড় ভাস্কর্য সেখানে সাজিয়েছিলাম।
আমরা চেষ্টা করছিলাম, যেন প্রদর্শনীটি সুন্দরভাবে করা যায়। অবশ্য ঢাকা আর্ট গ্রুপের প্রথম চিত্র প্রদর্শনী হয়েছিল ঢাকা হলের লিটন হলে, যেটি বর্তমানে শহীদুল্লাহ হল নামে পরিচিত। প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৫১ সালে। যা–ই হোক, ২০ তারিখে মাইকে ঘোষণা করা হলো যে আগামীকাল ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে । কারণ, ২১ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ছাত্র জমায়েতের কথা হয়েছিল ।
আমি বাসা থেকে সকালে বেরিয়ে প্রথমে জাদুঘর প্রাঙ্গণে যাই। ওখানে দেখা হয় সহকর্মী ও সহপাঠীদের সঙ্গে। পরে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তখন কেমন একটা থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে । ১৪৪ ধারা ভাঙা হবে কি হবে না, এটা নিয়ে একটা দোদুল্যমান মানসিকতা কাজ করছে। ওদিকে স্কুল-কলেজের ছাত্ররা আস্তে আস্তে জমায়েত হচ্ছে। আবার রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ১৪৪ ধারা ভাঙা হবে না। হঠাৎ আমতলায় একটা গণজমায়েতের মতো হলো। ওখানে একজন নেতা (আমি নাম মনে করতে পারছি না) বলল যে ১৪৪ ধারা ভাঙা চলবে না।
ছাত্ররা খুব ক্ষুব্ধ হলো। তারা নানা রকম কর্কশ ভাষায় তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করল। নদী যেমন আপন গতিপথ বেছে নেয়, তেমনি আন্দোলনের ভেতর থেকে নেতা বেরিয়ে আসে। ঠিক হলো, ১৪৪ ধারা ভাঙা হবে। তবে পাঁচজন পাঁচজন করে বেরোবে। নাম লেখা হচ্ছে কারা পাঁচজন পাঁচজন করে বেরোবে। ঠিক এ সময় পুলিশ টিয়ার গ্যাস মারা শুরু করল। টিয়ার গ্যাসের অভিজ্ঞতা আমাদের কারও ছিল না। দেখলাম, চোখ–মুখ জ্বালা করছে, কাশি হচ্ছে।
ওখানে একটা পুকুর ছিল। কারা যেন বলল, পুকুরের পানিতে রুমাল ভিজিয়ে নিয়ে চোখ-মুখ মুছতে। আমরা সবাই পুকুরের পানিতে রুমাল ভিজিয়ে নিলাম। অনেকেরই রুমাল ছিল না। তারা গায়ের জামা খুলে ওটা ছিঁড়ে ভিজিয়ে অনেকের মধ্যে বিতরণ করে দিয়েছে। পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুড়ছে, আমরাও টিয়ার গ্যাসের শেলগুলো খুঁজে নিয়ে ওদের দিকে পাল্টা ছুড়ে মারছি। ঘটনাটা ঘটছিল বর্তমানে যেখানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, তার দক্ষিণ দিকের উইংটায়; আগে তার পাশ দিয়ে রেললাইনটা গিয়েছিল।
যাহোক, আমাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল রাস্তা দিয়ে গিয়ে অ্যাসেম্বলি হলের দিকে যাব। তখন অ্যাসেম্বলিতে সভা চলছে। সেখানে আমাদের দাবি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কিন্তু রাস্তা দিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না, সারা রাস্তায় পুলিশ। মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে ওপরের অংশে লোহার রিং দেওয়া যে প্রাচীরটা ছিল, অসংখ্য ছাত্র-জনতার গায়ের ধাক্কায় সে প্রাচীরের মাঝখান দিয়ে কিছু অংশ ভেঙে পড়ে গেল। সেই ভাঙা জায়গাটুকু দিয়ে ছাত্ররা লাফ দিয়ে পড়ছে হাসপাতালের প্রাঙ্গণে। তখন জগন্নাথ হলের উত্তর দিকের একটি অংশে গড়ে উঠেছিল অ্যাসেম্বলি। মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাস থেকে কাছেই।
ছোটবেলায় আমি দেখেছি, ওখানে ছিল আমবাগান। বর্তমান ঢাকা মেডিকেল আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ ছিল। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় ওখানে আহত সৈনিকদের জন্য একটা হাসপাতাল স্থাপন করা হয়। পাকিস্তান হওয়ার পর ওই হাসপাতাল অংশটা হাসপাতালই থেকে যায়। ওটা আর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে থাকেনি। উত্তর দিকের ওই আমবাগানটায় বাঁশ দিয়ে সৈনিকদের ব্যারাক তৈরি করা হয়েছিল। মাঝখানে একটা ইটের রাস্তা। দুই পাশে ছাউনি। আস্তে আস্তে আমরা ওই ব্যারাকে জড়ো হলাম। ওখান থেকে অ্যাসেম্বলি হলটা খুব কাছে। আমার সঙ্গে আমার বন্ধু হাসান হাফিজুর রহমান ছিল। পুলিশ এখানে টিয়ার গ্যাস ছুড়ছে। আমরা পাল্টা টিয়ার গ্যাসের শেলগুলো ছুড়ে মারছি। মেডিকেলের ছাত্ররা তাদের রুম থেকে কলসিতে রাখা পানি এনে শেলগুলোর ওপর ঢেলে দিচ্ছে, যাতে ধোঁয়া না আসে। এ রকম একটা পাল্টাপাল্টি যুদ্ধের মতো অবস্থা।
এমন সময়, আমার মনে হয় দুপুরের পরে, সম্ভবত তিনটার দিকে, দেখলাম পুলিশ হাত ইশারা করে ডাকছে। বলছে, ‘আপনারা কী বলতে চান বলেন।’ কিছু ছাত্র যখন সামনে এগিয়ে এসেছে, হঠাৎ গুলির শব্দ। ভয়ার্ত পাখির মতো আমরা ছিটিয়ে সরে গেলাম। আবার আমরা এসে জড়ো হয়েছি। এই কাপুরুষতার জন্য একটু লজ্জাও পাচ্ছি। বন্ধুদের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারছি না। নিজেরা বলাবলি করছি, ‘বোধ হয় ফাঁকা গুলি চালিয়েছে, আমাদের ভয় দেখানোর জন্য।’ তখনো কিন্তু জানি না, সত্যি সত্যি গুলি ছুড়েছে কি না।
আমি আর হাসান বসে গল্প করছি। হঠাৎ আমি দেখলাম, মেডিকেল কলেজ ও ব্যারাকের মাঝখানটাতে পিঁপড়া যেমন শস্যদানাকে ঘিরে নিয়ে আসে, সে রকম পাঁচ-ছয়জনের একটা জটলার মতো, তারা কী যেন নিয়ে আসছে। আমার কৌতূহল হলো, দৌড়ে ওখানে গেলাম। আমিও ওই দলে ঢুকে গেলাম। দেখলাম, প্যান্টের মধ্যে শার্ট গোঁজা, লম্বা শেভ করা একজনকে। তার সারা মুখে বড় বৃষ্টির ফোঁটার মতো ঘামের বিন্দু। আর কল খুলে দিলে যেমন অঝোরে পানি পড়ে, তেমনি রক্ত ঝরছে। সে বারবার জিব বের করছে আর বলছে, ‘পানি পানি।’ আমার হাতের রুমালটা ঘামে পানিতে ভেজানো ছিল। আমি ইতস্তত করছিলাম রুমালটা নিংড়ে দেব কি না। সে কাটা মুরগির মতো ছটফট করছিল। অবশেষে আমি নিংড়ে দিলাম। সে ফিসফিস করে বলল, ‘আমার নাম আবুল বরকত, বিষ্ণুপ্রিয়া ভবন, পল্টন লাইন, আমার বাড়িতে খবর দিয়েন।’ আর কিছু বলেনি। বডিটাকে আমরা যখন মেডিকেলে নিয়ে গেলাম, সেখানে টিয়ার গ্যাস ও লাঠিচার্জে আহত আরও অনেকে এসেছে। প্রথম গুলিবিদ্ধ কাউকে আমরাই নিয়ে গিয়েছিলাম। নার্স, ডাক্তার—সবাই ভয়ে বিহ্বল হয়ে গেল।
আহতরা তখন নিজেদের শারীরিক যন্ত্রণা ভুলে বলছিল, ‘ওনাকে দেখেন, ওনাকে দেখেন।’ ওই সময় আমার এক সহকর্মী ইমদাদ হোসেনকে ওখানে দেখলাম, সে তখন সরকারকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করছে। আমি তাকে বললাম, ‘এখানে গালিগালাজ করে লাভ নেই, আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে প্রদর্শনীটি বন্ধ করা।’ চিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন হওয়ার কথা, ওটা বন্ধ করতে হবে। প্রদর্শনী উদ্বোধন করার কথা ছিল তখনকার গভর্নর ফিরোজ খান নূনের স্ত্রীর।
ইংরেজ মহিলা ভিকারুননিসা নূন, আর্ট কলেজের প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নে তাঁর ভাবনা ছিল। জয়নুল আবেদিনের সঙ্গে তাঁর খুব ভালো সখ্য ছিল। আমি বেরিয়ে আসছি, দেখলাম, স্ট্রেচারের মধ্যে একটা লাশ। তার মাথার খুলিটা নেই। মগজটা বোধ হয় শুকনা দূর্বাঘাসে পড়ে ছিল, তার মধ্যে ঘাস লেগে রয়েছে। ওটাকে তুলে আবার ওই স্ট্রেচারের মধ্যে রাখা হয়েছে। পরে জেনেছি, তার নাম ছিল রফিক। তারপর আরেকজনকে আমি দেখেছি। গোড়ালিটা ফাটা বাঁশের মতো ফাঁক হয়ে রয়েছে। সেখানে অলি আহাদের সঙ্গে দেখা হলো, তিনি তখন যুবলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তাঁকে বরকতের নাম-ঠিকানা দিলাম।
আমি জাদুঘরে এলাম। তখন আমি পায়জামা ও শার্ট পরতাম। আমার শার্টটি ছিল চকলেট রঙের। ওখানে কামরুল হাসান ছিলেন, সফিউদ্দীন ছিলেন। জয়নুল আবেদিন তখন বিলেতে। আমি বললাম, ‘স্যার, এ রকম ঘটনা ঘটেছে, আমরা তো প্রদর্শনী করতে পারি না।’ ওখানে কেউ কেউ বলল, লেডি নূন যেহেতু আর্ট কলেজ ও আর্টের প্রতি সহানুভূতিশীল, আমরা না হয় প্রদর্শনী উদ্বোধন করি। পরে বন্ধ করে দিতে পারি। আমি বললাম, ‘না, সেটা হবে না। তাহলে আমি আমার ছবি দেব না।’ আমার সঙ্গে আমিনুল ইসলাম, বিজন চৌধুরী, রশিদ চৌধুরী, কাইয়ুম চৌধুরী, আবদুর রাজ্জাক, দেবদাস চক্রবর্তী—সবাই বললেন, ‘আমরাও আমাদের ছবি নামিয়ে ফেলব।’ সেই পরিস্থিতিতে মোটামুটি ঠিক হলো যে প্রদর্শনী হবে না। তখন কামরুল হাসান ও সফিউদ্দীন স্যার আবদুর রাজ্জাককে বললেন, ওকে বাসায় পৌঁছে দাও। ‘আমরা তখন বেগমবাজারে থাকি। রিকশায় যখন নাজিমউদ্দিন রোড দিয়ে যাচ্ছি, লোকাল বাসিন্দারা বলছে, ‘কি, গুলি নাকি চলেছে?’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ।’
যাহোক, আমি যখন বাসায় এলাম, মা আমাকে আতঙ্কিত হয়ে দেখলেন। বাবা তখনো আমাকে পুরোপুরি দেখেননি। কিন্তু আমার ঢোকা বুঝতে পেরে বাবা একটু রাগান্বিত স্বরে বললেন, ‘তোমাকে না বলেছিলাম, আজকে তুমি বেরোবে না।’ বাবা জানতেন আমি রাজনীতি করি। বাবার এ কথা শুনে আমার খুব রাগ হলো। আমি চিৎকার করে বললাম, ‘দেখেন কী হয়েছে?’ তখন বাবা আমাকে দেখলেন। আমার শার্টের সামনের দিকে রক্তে একেবারে লাল। বাবা বললেন, ‘কেউ মারা গেছে!’ আমি বললাম, ‘আমি তো অন্তত কয়েকজনকে দেখেছি।’ বাবা মাকে বললেন, ‘কালো আচকানটা কোথায় ?’
মা কালো বাক্সটার মধ্য থেকে আচকানটা এনে দিলেন। বাবার গোঁফ ছাঁটার জন্য একটা ছোট কাঁচি ছিল। ওই কাঁচি দিয়ে আচকানের নিচ থেকে একফালি কাপড় কেটে আমার হাতে দিয়ে বললেন তাঁর হাতে বেঁধে দিতে ।
তিনি আমাকে বললেন, ‘ভাষার জন্য যদি তোমার জীবন যেত, তাতে আমার কোনো দুঃখ ছিল না।’ পরে শুনেছি, ঘটনার সময় সেখানে দোতলায় শিক্ষকদের বসার ঘরে বাবাও ছিলেন। টিয়ার গ্যাসের শেল নাকি শিক্ষকদের বসার ঘরের জানালার ওপরও পড়েছিল। এসব কর্মকাণ্ড দেখে নাকি বাবা বেশ রাগান্বিত ও উত্তেজিত হয়ে উঠেছিলেন ।
’৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানে সাহিত্য সম্মেলন হলো, এখন যেটা বাংলা একাডেমি, সেটা ছিল পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী নূরুল আমীনের বাসভবন। ওই পরিত্যক্ত ভবনে সাহিত্য সম্মেলন উপলক্ষে চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হলো। তার দায়িত্বে ছিলাম আমি, রশিদ চৌধুরী, আবদুর রাজ্জাক, কাইয়ুম চৌধুরী ও দেবদাস চক্রবর্তী । আমিনুল ইসলাম তখন ইতালিতে। আমার একটি কাজ ছিল ওই প্রদর্শনীতে। নাম ‘রক্তাক্ত একুশে’। এটি ’৫২-এর পরে করেছিলাম। হাসান হাফিজুর রহমান একুশে ফেব্রুয়ারি নামে যে গ্রন্থটি সংকলন করেছিলেন, তার মধ্যে ওই কাজটি মুদ্রিত হয়েছে।
ওই বইটির জন্য আমি একটা লিনোকাট করেছিলাম এবং কিছু ইলাস্ট্রেশনও করেছিলাম, বিজন চৌধুরীও করেছিল। কিন্তু বিজন চৌধুরী হিন্দু ছিল বলে তার নামটা ব্যবহার করা হয়নি। লেখা ছিল—স্কেচ মূর্তজা বশীর (তখন এই বানানে লিখতাম) ও অন্যান্য। ’৬৯ সালে প্রকাশিত শহীদুল্লা কায়সারের সংশপ্তক উপন্যাসের প্রচ্ছদ এঁকেছিলেন দেবদাস চক্রবর্তী। কিন্তু প্রচ্ছদের শিল্পীর নামের জায়গায় লেখা রয়েছে ‘অনামি’।
পাকিস্তানের সেই পরিস্থিতিতে দেবদাস চক্রবর্তীর নামটা ছাপতে একটু ইতস্তত করেছিলেন বলেই মনে হয় আমার। ’৫৩-৫৪ সালেও একই কারণে এ রকম অনেক ঘটনা ঘটেছে। কারণ, পাকিস্তান সরকার সব সময় এ দেশের সব সংগ্রাম, আন্দোলনের ঘটনাকে ভারত ও হিন্দুদের কাজ বলে চালানোর চেষ্টা করেছে। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনকে তখনকার মর্নিং নিউজ পত্রিকায় ভারত ও হিন্দুদের কাজ বলে অভিহিত করা হয়েছিল।
আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতির জন্য একটা গৌরবের অধ্যায়, আমার জন্য তো বটেই। কারণ, আমি সেই আন্দোলনে শরিক হতে পেরেছি ।
সূত্র: আমার জীবন ও অন্যান্য, মুর্তজা বশীর, বেঙ্গল পাবলিকেশন্স, ২০১৪
- মুর্তজা বশীর : প্রয়াত বরেণ্য চিত্রশিল্পী।
Discussion about this post