নগরীর খানপুরের আদী বাসিন্দা তাহের পেটের দায়ে অটো রিক্সা কিনে শহরে চালায় । তাতে তার সংসার চলে চলে কোন রকম । দারিদ্রতার কারণে এই অটো রিকশা চালাতে এসে নানা ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয় । পুলিশী হয়রানী । আটক করলে কখনো এক হাজার আবার কখনো দেড় হাজার টাকা গুণতে হয় জরিমানা । এরপরেও প্রায় এক দুপুর আটকে থাকতে হয় ডাম্পিং নামক পুলিশী আটক খানায়। এমন হয়রানী থেকে রক্ষা পেতে টোপ দেয় প্রতারক বরিশইল্লা সায়মন । নতুন করে এই সায়মন নিজেকে বিশাল সাংবাদিক ও সাংবাদিকদের নেতা পরিচয় দিয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল, পিপিএম (বার) এর সাথে ফটো তুলে দেখানোর মাধ্যমে প্রতি মাসে কোন পুলিশ অটো রিক্সা ধরবে না, এমন আশ্বাস দিয়ে নিজেকে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতিমাসে দেড় হাজার টাকা চুক্তিতে অটো রিক্সায় ‘টিয়া মার্কা’ টোকেন দিচ্ছেন এই সায়মন।
প্রতারক সায়মনের এমন চাঁদাবাজির বিষয়ে অসংখ্যবার বিভিন্ন গণমাধ্রমে সংবাদ প্রকাশের পরও টনক নড়ে নাই পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের। প্রতারক সায়মন নগরীর অটো রিক্সার টোকেন বাণিজ্যের নামে চাঁদাবাজির মুল হোতা মটর সাইকেলে একটি দৈনিক পত্রিকার ষ্টিকার ব্যবহার করে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয়ে নানা অপরাধ কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে দীর্ঘদিন যাবৎ ।
অথচ এমন ঘটনায় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর মানবকণ্ঠের একজন দায়িত্বরত কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে ২ মিনিট ১৭ সেকেন্ড মুঠোফোনে আলাপকালে গত ১২ আগষ্ট নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, মূলত সায়মন কোন সাংবাদিক না । সে মানব কন্ঠের বিজ্ঞাপন দেয় বলে তাকে কার্ড দেয়া হয়েছে।
খানপুরের অটো চালক তাহের জানায়, “সায়মন এমন ষ্টিকার চুক্তি করে কয়েক শত অটো রিকশায় দিয়েছেন । এবং প্রতি মাসে দেড় হাজার টাকা চাঁদা (চান্দা) নেন । আমি নিজেও দেড় হাজার টাকা করে (চান্দা) দিয়ে আসছি ।“
খোজ নিয়ে আরো জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্যের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে এই সায়মন চক্র চালিয়ে যাচ্ছে চাঁদাবাজির মতো নগ্ন কর্মকান্ড।
বিগত সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ তেকে জানা যায় এই প্রতারক সায়মনের বাড়ি বরিশালের অজ্ঞাত স্থানে । কেউ তাকে পূর্ণাঙ্গ পরিচয় না জানলেও এই সায়মন ফতুল্লায় বিয়ে করে নানা অপরাাধ কর্মকান্ড ঘটিয়ে ফতুল্রা থেকেও বিতারিত । এরপর নগরীর একটি প্রতারক চক্রের সাথে এই সায়মনের যোগাযোগের সূত্র ধরে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংগঠনের পরিচয় দিয়ে ৫ শত অটো রিকশা থেকে চাঁদাবজি শুরু করে।
এমন সংবাদের পর ফের নিজেকে সেনাবাহিনীর সেকেন্ড লেফটেনেন্ট পরিচয় দিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের নানাভাবে হুমকি দেয়। সেকেন্ড লেফটেনেন্ট পরিচয় দেয়া প্রতারক সায়মনের অডিও সকল গোয়েন্দা সংস্থা এবং আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের নজরে আসার পর কিছুদিন গা ঢাকা দেয় এই প্রতারক।
পুলিশ সুপার হিসেবে জায়েদুল আলম ফুয়াদের বদলীর পর নবনিযুক্ত পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল, পিপিএম (বার) কিছু অনুধাবন করার আগেই সায়মনসহ প্রতারকচক্র নানা সংগঠনের নাম ব্যবহার করে সাক্ষাতের পর ছবি তুলে তা পুরো নগরীতে প্রচার চালায়, “এবার এসপির সাথে যোগাযোগ হয়েছে । আর কোন অসুবিধা নাই । এবার আর কোন ট্রাফিক পুলিশ আমার স্টিকারযুক্ত অটো রিকশা বা মিশুক আটক করবে না।” এমন আশ্বাস দিয়ে ফের অটোর চাঁদাবজির মহোৎসব অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।
এমন প্রতারকদের বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ (এডমিন) আবদুল করিম শেখ নাারয়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, আমরা প্রতিদিন এই প্রতারকদের স্টিাকরযুক্ত অটো রিক্সা আটক করছি। এরপরও শত শত ষ্টিকার যুক্ত অটো চলছেই । আর চাঁদাবাজি হচ্ছেই । এই প্রতারকদের বিষয়ে আমারে পুলিশের অপরাধ বিভাগকে অবহিত করলে তারা যদি কিছু করে তাহলে একটু হলেও আমরা স্বস্তি পাবো । আর এই প্রতারক চক্র কি করছে তা সকলেই জানেন। আমি এই প্রতারকদের বিষয় নিয়ে অবশ্যই কথা বলবো কি করা যায় এই অপরাধীদের (চাঁদাবাজদের) বিষয়ে ।
Discussion about this post