উচ্ছ্বসিত কন্ঠে “নারায়ণগঞ্জকে প্রথম স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তোলা হবে, নারায়ণগঞ্জকে স্মার্ট সিটি করতে চাই“ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোলাইনের নির্মাণকাজের উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন মন্তব্য করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প, নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জের রাজউক কমার্শিয়াল প্লট মাঠে পাতাল মেট্রো লাইন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন ঘোষণা ও ফলক উন্মোচন করে এমন বক্তব্য দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে আমরা পাতাল রেলের কাজের উদ্বোধন করলাম। এর আগে উড়াল মেট্রোরেল উপহার দিয়েছি। এটা ওপর দিয়ে যাচ্ছে, এবার মাটির নিচ দিয়ে পাতাল রেল। দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আরেকটি মাইলফলক স্থাপিত হলো।’
ডিএমটিসিএলের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, এমআরটি লাইন-১-এর আওতায় নির্মাণ হবে মোট ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার রেলপথ। এ পথে থাকবে দুটি রুট— বিমানবন্দর রুট (বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর), দ্বিতীয় পূর্বাচল রুট (নতুনবাজার থেকে পিতলগঞ্জ ডিপো)। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত রুটের দৈর্ঘ্য হবে ২০ কিলোমিটার। এ রুটে মোট পাতাল স্টেশন থাকবে ১২টি।
বিমানবন্দর-কমলাপুর রুটই হবে দেশের প্রথম পাতাল রেলপথ। আর দ্বিতীয় অংশ পূর্বাচল রুটের যে ১১ কিলোমিটার, তার পুরোটাই যাবে উড়ালপথে। এ পথে স্টেশনের সংখ্যা মোট ৯টি। উড়াল-পাতাল মিলিয়ে প্রতিটি স্টেশনে ট্রেন থামবে আড়াই থেকে সাড়ে তিন মিনিট পরপর। এ ৩১ কিলোমিটার পথে চলবে ২৫টি ট্রেন। এটি চালু হলে প্রতি ১০০ সেকেন্ড পরপর চলাচল করবে, যার প্রতিটিতে একবারে ৩ হাজারের বেশি যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা থাকবে। মেট্রোরেলের মতো এটিও হবে বিদ্যুচ্চালিত এবং দূরনিয়ন্ত্রিত ট্রেন।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক বলেন, রূপগঞ্জের পিতলগঞ্জ মৌজায় ৮৮ দশমিক ৭১ একর জমিতে হবে মেট্রোরেলের ডিপো। এতে ব্যয় হবে ৬০৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। বিমানবন্দর রুট ও পূর্বাচল রুটে চলাচলকারী সব মেট্রো এ ডিপোর সুবিধা পাবে।
তিনি আরও বলেন, ‘পিতলগঞ্জে মেট্রোরেলের ডিপো নির্মাণ করা হবে। আর এর মধ্য দিয়ে পাতাল রেলের নির্মাণকাজ শুরু হবে। এমআরটি লাইন-১ দুই ভাগে বাস্তবায়ন করা হবে। একটি অংশ হবে পাতাল, অন্যটি উড়ালপথের। দুটি অংশের মূল ডিপো নির্মাণকাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এমআরটি লাইন-১ বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা অর্থসহায়তা দেবে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন অ্যাসোসিয়েশন (জাইকা)। বাকি খরচ মেটানো হবে সরকারি তহবিল থেকে।’
পাতালপথে কমলাপুর, রাজারবাগ, মালিবাগ, হাতিরঝিল, রামপুরা, পূর্ব হাতিরঝিল, বাড্ডা, উত্তর বাড্ডা, নতুনবাজার, নদ্দা, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ ও বিমানবন্দরে স্টেশন থাকবে। প্ল্যাটফর্মে ওঠানামার জন্য উভয় পথের স্টেশনে থাকবে লিফট, সিঁড়ি ও এস্কেলেটর। এ ছাড়া নতুনবাজার স্টেশনে এমআরটি লাইন-৫ নর্দান রুটের সঙ্গে আন্তঃলাইন সংযোগ থাকবে। নদ্দা ও নতুনবাজার স্টেশন আন্তঃসংযোগ রুট ব্যবহার করে বিমানবন্দর থেকে পূর্বাচলে যাওয়া যাবে।
Discussion about this post