যিনি খোদ আওয়ামীলীগ নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সেক্রেটারীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে আলোচনায় আসেন সেই সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নুর বিরুদ্ধে এবার এক কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন শরিফ হোসেন নামের এক ব্যক্তি।
এ ঘটনায় উপজেলার রাজনৈতিক মহলে সর্বত্র তোলপাড় চলছে। এমন চাঁদাবাজির ঘটনায় চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন তিনি।
মামলা দায়েরের পর বিজ্ঞ বিচারক মো. নূর মহসীন জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার অপর আসামি হলেন গোহাট্টা এলাকার বাদশা মিয়ার পুত্র আহাম্মদ।
এমন মামলার তদন্ত কার্যক্রম ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে নানাভাবে অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলেও গুঞ্জরন উঠেছে সর্বত্র।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শরিফ হোসেন দেশে ফিরে এসে সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চর মেনিখালী মৌজায় লিটন মিয়া ওরফে ইব্রাহীমের কাছ থেকে ৮ শতক জমি ক্রয় করেন বাড়ি নির্মাণের জন্য। জমি নামজারি করে সেখানে মাটি ভরাটও করেন। এরপর দশতলা ভবন নির্মাণের জন্য মাটির পরীক্ষা সম্পন্ন করে সম্প্রতি জমিতে রড, সিমেন্ট ও ইট-বালু নিয়ে আসেন। নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে আসার পর গত ১০ জানুয়ারি রফিকুল ইসলাম নান্নুর নেতৃত্বে ১০/১৫ জনের সন্ত্রাসী দল জমিতে এসে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার জন্য শ্রমিকদের হুমকি দেয়। খবর পেয়ে জমির মালিক শরিফ ছুটে আসেন।
এ সময় তার সাথে ছিলেন তার ভাই জসীম উদ্দিন, ফয়সাল, সামাদ ও বজলুর রহমান। তারা রফিকুল ইসলাম নান্নুকে কাজ বন্ধ করার জানতে চাইলে সাথে সাথে তাদেরকে লোহার রড, কাঠ ও বাঁশ দিয়ে বেধড়ক পেটাতে শুরু করে। এ সময় শরিফকে বাঁচাতে তার ভাই ছুটে আসলে তাকেও পিটিয়ে আহত করে সন্ত্রাসীরা।
তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে নান্নু এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে জমিতে কাজ করতে দেয়া হবে না বলেও হুমকি দেয়। এমনকি শরিফকে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়। এ ঘটনায় শরিফ মিয়া সংশ্লিষ্ট থানাকে বিষয়টি জানালেও কোন প্রকার ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ; বাধ্য হয়ে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন।
বিষয়টি আমলে নিয়ে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা যুবলীগ সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু বলেন, জমিটি নিয়ে বিরোধ রয়েছে তাই তাদেরকে বাধা দেওয়া হয়েছে। কোনো চাঁদা দাবি করা হয়নি।
সোনারগাঁ থানার ওসি মাহাবুব আলম জানান, এ বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেননি। অভিযোগ পেলে তিনি ব্যবস্থা নিতেন।
অথচ এই সোনারগাঁ যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম নান্নু এক বছর এক মাস পূর্বে অর্থাৎ ২০২১ সালের ২৪ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাদারণ সম্পাদক এডভোকেট খোকন সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ৫ লাখ টাকা চাঁদাবাজির। খোকন সাহার বিরুদ্ধে ৫ লাখ টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ উত্থাপনের পর ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয় । ওই সময় এই রফিকুল ইসলাম নান্নু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে আলোচনায় উঠে আসে খোকন সাহা আর নান্নুর বিষয়টি। নারায়ণগঞ্জেও পরিচিতি পায় রফিকুল ইসলাম নান্নু । আর এই এক বছর এক মাস পর খোকন সাহার চাঁদাবাজির শিকার সেই রফিকুল ইসলাম নান্নু বিরুদ্ধে উঠেছে কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ । যা এখন সকলের মুখে উচ্চারিত হচ্ছে, “খোকন সাহার চাঁদাবাজির শিকার সেই নান্নুই এখন বড় চাঁদাবাজ !“
Discussion about this post