আলো ফুঁটে উঠার আগে থেকেই শীতলক্ষ্যার নদী পথে হাজার হাজার ট্রলার ও লঞ্চযোগে এবং সড়ক পথে লাখো মানুষ উপস্থিত হয়েছে রূপগঞ্জের এক সময়ের অজোপাড়া গা হিসেবে পরিচিত পিতলগঞ্জে । যা এখন দেশের উন্নত নগরীতে রূপান্তরিত হচ্ছে এই পিতলগঞ্জ প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে নতুন সাজে সেজেছে। নেতাদের ব্যানার-ফেস্টুন আর তোরণে ভরে গেছে পুরো এলাকা। পূর্বাচলকে সাজানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দনভাবে।
প্রস্তুত মঞ্চ আর মাঠ। পূর্বাচলের ৪ নম্বর সেক্টরে পাতাল রেলের ডিপোর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
এদিকে দলীয় নেত্রীকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। নিজেদের চাওয়া পাওয়ার কথা জানাতে চান তারা।
ব্যানার-ফেস্টুন-তোরণে ছেয়ে গেছে মহাসড়কসহ জেলা-উপজেলার প্রধান সড়ক। প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে জেলা প্রশাসনসহ দলীয় নেতাকর্মীরা এখন মহাব্যস্ত সময় পার করছেন।
আর প্রধানমন্ত্রীর এই সফর রূপগঞ্জবাসীর জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে জানান দলীয় নেতারা। তাদের দাবি, সমাবেশে লাখো মানুষের সমাগম ঘটবে।
তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে উন্মুখ হয়ে আছে সবস্তরের মানুষ। প্রধানমন্ত্রীর আগমনের দিন সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মী সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন।
দেশের প্রথম মেট্রোরেলের পর এবার ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি-১) প্রকল্পের আওতায় প্রথম পাতালরেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধন হচ্ছে আজ ।
আজ বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় পূর্বাচল নতুন শহর পিতলগঞ্জ প্রকল্প এলাকায় এই কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি মূলত দ্বিতীয় মেট্রোরেল ও প্রথম পাতালরেল।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশের প্রথম মেট্রোরেলের উড়ালপথের উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চালু হয়েছে। এবার দ্বিতীয় মেট্রোরেল হচ্ছে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত, যা মূলত পাতালরেল। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) বাস্তবায়ন হতে চলা প্রায় ২০ কিলোমিটার এই রেলপথ মাটির নিচে নির্মিত হবে।
প্রকল্প সূত্র জানায়, দ্বিতীয় মেট্রোরেলের (উড়াল ও পাতাল) দুটি রুটের মোট দৈর্ঘ ৩১ দশমিক ২৪ কিলোমিটার। এটি এমআরটি লাইন-১ হিসেবে পরিচিত। এর মধ্যে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত প্রায় ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার পাতালরেল। এই রুটে ১২টি স্টেশন হবে। এগুলো হলো- বিমানবন্দর, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩, খিলক্ষেত, যমুনা ফিউচার পার্ক, নতুন বাজার, উত্তর বাড্ডা, বাড্ডা, হাতিরঝিল, রামপুরা, মালিবাগ, রাজারবাগ ও কমলাপুর।
এ ছাড়া পূর্বাচল রুটে নতুন বাজার স্টেশনটি পাতালে নির্মাণ করা হবে। নতুন বাজার থেকে পূর্বাচলের নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জ পর্যন্ত যাবে এই রুট; যার দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার। উড়ালপথের এই রুটে স্টেশন হবে ৯টি। এগুলো হলো- নতুন বাজার, যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা, পুলিশ অফিসার্স হাউজিং সোসাইটি, মাস্তুল, পূর্বাচল পশ্চিম, পূর্বাচল সেন্টার, পূর্বাচল পূর্ব, পূর্বাচল টার্মিনাল ও পিতলগঞ্জ ডিপো।
এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা জাপানি ঋণ আর বাকি অর্থ ব্যয় করবে সরকার। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দৈনিক ৮ লাখ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে।
প্রকল্প সূত্র জানায়, প্রকল্পটি চালু হলে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১২টি স্টেশনে থেমে ২৪ মিনিট ৩০ সেকেন্ড, নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল টার্মিনাল পর্যন্ত ৯টি স্টেশনে থেমে ২০ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড এবং কমলাপুর থেকে পূর্বাচল টার্মিনাল পর্যন্ত ১৬টি স্টেশনে থেমে ৪০ মিনিট।
নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জে মেট্রোরেলের ডিপো নির্মাণে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ডিএমটিসিএল। এ বিষয়ে কোম্পানিটির এমডি এমএএন সিদ্দিক জানিয়েছেন, ২ ফেব্রুয়ারি পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকায় দেশের প্রথম পাতালরেলের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে রূপগঞ্জ জমতা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন রাজউকের কমার্শিয়াল প্লট মাঠে একটি সভার আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, রূপগঞ্জের পিতলগঞ্জ মৌজায় ৮৮ দশমিক ৭১ একর ভূমিতে মেট্রোরেলের ডিপো নির্মাণ করা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এর মধ্য দিয়ে পাতালরেলের নির্মাণ কাজ শুরু হবে। মূলত এমআরটি-১ প্রকল্পের একটি অংশ পাতাল এবং অপরটি উড়াল হবে। বিমানবন্দর রুট ও পূর্বাচল রুটে চলাচলকারী সব মেট্রোরেল ডিপোটির সুবিধা পাবে।
Discussion about this post