চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে চলতি বছরের মার্চ মাসের ২২ অথবা ২৩ তারিখ রাতে সেহরী খেয়ে রমজান মাসের শুরু হবে। আর এই আড়াই / তিন মাস আগে থেকেই নারায়ণগঞ্জের প্রায় ৩০ টি কারখানায় বিরামহীন চলছে মুড়ি তৈরীর কার্যক্রম। একেকজন কারখানার মালিক কত বেশী বিষাক্ত মুড়ি উৎপাদন করে বিক্রি করতে পারে সেই লক্ষ্যে চলছে প্রতিযোগিতা । এরই মধ্যে আইনশৃংখলা বাহিনীর প্রায় সকল সংস্থাকে পুরোনো নিয়ম অনুযায়ী রাস্ট্রয়াত্ব গ্যাস চুরি / বিদ্যুৎ চুরি ও বিষাক্ত হাইড্রোস / ইউরিয়া সার মিশ্রণের কারণে নারায়ণগঞ্জে কর্মরত কর্মকর্তাদের ম্যানেজ নামক ঘুষ লেনদেন করেছে বলে খোদ কোন কোন কারখানার কর্মচারীরা নিশ্চিত করেছে।
গত কয়েকদিন যাবৎ ফতুল্লা / সিদ্ধিরগঞ্জ / বন্দর ও রূপগঞ্জ এলাকার মুড়ি তৈরীর কারখানায় সরজমিনে খোজ নিতে গিয়ে জানা যায় চাঞ্চল্যকর খবর ।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে ফতুল্লার এক মুড়ি তৈরীর কারখানার কর্মচারী বলেন, ‘গত বছর রমজান মাসে ইউরিয়ার সার ও হাইড্রোস মিশিয়ে মুড়ি তৈরীর সংবাদ প্রকাশের পর থানার ওসি দারোগা পাঠিয়ে প্রতিটি মুড়ির কারখানা থেকে নগদ টাকা ঘুষ ছাড়াও বিনে পয়সায় এক বস্তা করে মুড়ি নেয় সকল পুলিশের ইফতারের কথা বলে। যা গত বছর তোলপাড়ের সৃস্টি হলেও কোন অসাধু এই মুড়ি ব্যবসায়ী বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় নাই ।
এভাবেই খোজ নিয়ে জেনেছি, প্রতি বছরের মতো প্রতিটি থানা থেকেই মুড়ি আর ঘুষ লেনদেন হয়েছে এই গ্যাস চুরি / বিদ্যুৎ চুরি আর বিষ মিশানোর কারণে যেন পুলিশ কোন ডিস্টার্ব না করে । আগাম এই ঘুষ পাঠানোরে পর জেলার প্রায় ৩০ টি কারখানায় বিষাক্ত মুড়ি তৈরী করে নারায়ণগঞ্জের পাইকারী বাজারের মাধ্যমে সারাদেশে এই মুড়ি পাঠানো শুরু করেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা ।
মুড়ির কারখানায় এমন দূর্ণীতি ও বিষাক্ত ক্যামিকেলের ব্যবহারের খবর প্রচারের পর কি কোন কারখানা আজো বন্ধ হয়েছে ? হয় নাই । কেন হয় নাই ? আইনশৃংখলা বাহিনী কি চুপ করে থকে ? এভাবেই নানা প্রশ্নের পর নিজেই যে কারখানায় কাজ করেন সেই কারখানার মালিকের নাম উল্লেখ করে একজন প্রতিবাদী কর্মচারী বলেন, “কারখানার মালিক নিজেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ঘুষখোরদের কে ম্যানেজ করেছে বলেই কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। আর কোন সাংবাদিক আইয়া দেইখ্যা গিয়ে হাজারো লেখলেও কিচ্ছুই হইবো না ।”
জানা যায়, রসনা প্রেমিক বাংলাদেশীদের ইফতারে নানা ভোজ্য খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে অন্যতম মুড়ি থাকতেই হবে । মুড়ির বিশাল চাহিদাকে সামনে রেখে এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের ২৫/৩০টি কারখানায় মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ইউরিয়া সার ও হাইড্রোজ মিশিয়ে রমজান মাসের বিশাল চাহিদার মুড়ি মুড়িতৈরীর লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ইতিমধ্যেই উৎপাদন করে পাইকারী বাজারে বিক্রিও করেছে । এমন বিষাক্ত ইউরিয়া সার ও হাইড্রোজ দিয়ে মুড়ি তৈরী করে বাজারজাত করলেও আইনপ্রয়োগকারী কোন সংস্থার প্রতিবছরের ন্যয় এবারো কারো কোন মাথা ব্যথা নাই । কালন হিসেবে এবারো বেড়িয়ে এসেছে ঘুষ লেনদেনের তথ্য ।
Discussion about this post