নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতা মনিরুল আলম সেন্টু দীর্ঘদিন যাবৎ সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। বিগত ইউনিয়র পরিষদ নির্বাচনের পূর্বে হুট করে গুঞ্জন উঠে সেন্টু সরকার বিরোধী কর্মকান্ডের কারণে নানা মামলায় আক্রান্ত হতে যাচ্ছে।এমন গুঞ্জনের পর তড়িগড়ি করে মহানগর আওয়ামীলীগের নেতাদের সাথে যোগসাজস করে দল পাল্টায় সেন্টু।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগ রাস্ট্র ক্ষমতা গ্রহণের পর শাসক দলের নেতাদের সাথে গোপন আঁতাত করে সদর উপজেলার কুতুবপুরের রাজত্বে একচ্ছত্র অধিপতি হয়ে বিএনপির রাজনীতি করে যাচ্ছিলো এই সেন্টু । এরপর সদ্য সমাপ্ত সারাদেশের ইউনয়ন পরিষদের নির্বাচনের পূর্বে নগরীর একটি পার্কে বসে নানা গোপন বৈঠকের পর সরকার বিরোধী কর্মকান্ডের কারণে মামলা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে এবং কুতুবপুরের রাজত্ব টিকিয়ে রাখতে বিএনপির রাজনীতিকে লাথি মেরে আওয়ামীলীগের রাজনীতি যোগ দেয় এই সুবিধাবাদী নেতা সেন্টু ।
লোকদেখানো এমন যোগদানের পরও এখনো বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সাথে গোপন আঁতাতের অভিযোগ রয়েছে এই সেন্টুর বিরুদ্ধে । এরই প্রমাণ করেছে বিজয় দিবসের একটি অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যন মনিরুল আলম সেন্টু । এখন দেখার বিষয় যারা এই সেন্টুকে শেল্টার দিচ্ছে তারা কি করেন আর বলেন । নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগের নেতাদের দিকে তাকিয়ে আছে সকল নেতাকর্মী ।
আপাততঃ নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে এমন মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের কয়েকজন নেতা ।
জানা যায়, বিজয় দিবসের একটি অনুষ্ঠানে ফতুল্লা থানাধীন কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে মনোনিত নির্বাচিত চেয়ারম্যন মনিরুল আলম সেন্টু বলেছেন, “কুতুবপুর এলাকাটি ক্রাইম প্রবল এলাকা। তবে, এলাকায় যে সকল অপরাধ কর্মকান্ড সংগঠিত হয় সে সমস্ত অধিকাংশ আপরাধের সাথেই ক্ষমতাসীন দলের লোকজনই জড়িত থাকে। তাছাড়া, বিরোধী দলের লোকজন থাকে এলাকা ছাড়া, কিভাবে তারা অপরাধ কর্মকান্ড করবে ? তাই এলাকার শান্তি বজায় রাখতে দলের নাম ব্যবহার করে যারাই অপকর্ম করবে তাদের প্রতিহত করা হবে ।“
তিনি আরো বলেন, এলাকায় মাদক এবং বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত হওয়ার কারনে বারংবারই গণমাধ্যমের পাতায় কুতুবপুরের নামটি উঠে আসে। আর এ অপরাধের সাথে যে সকল ব্যক্তির নাম উঠে আসে তাদের অধিকাংশই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।
গত ১৬ ডিসেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় বিজয় দিবস উপলক্ষে মুন্সিবাগ পঞ্চায়েত কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মনিরুল আলম সেন্টু একথা বলেন।
আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুস সাত্তার বিডিআরের সভাপতিত্বে উক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সেন্টু বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের অহংকার। জাতির শ্রেষ্ট্র সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা এদেশ স্বাধীন না করলে আমরা স্বাধীন রাষ্ট্র পেতাম না। পরাধীনতার গ্লানি নিয়ে আমাদের বেঁচে থাকতে হতো। আজকে স্বাধীনভাবে চলাচল করার জন্য একমাত্র অবদান আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের।
সেন্টু চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের কথা স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে তুলে ধরেন।
তবে এ ব্যাপারে পরবর্তীতে মনিরুল আলম সেন্টু গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে বলেন, আমি সরাসরি কোন দলের নাম ইঙ্গিত করে বলিনি। আমি বলেছি, যে দল ক্ষমতায় আসে তারাই সন্ত্রাসী এবং মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকে।
এমন সংবাদ প্রচারের পর পুরো ফতুল্লা জুড়ে আওয়ামীলীগের প্রায় সকল নেতাকর্মী ও সাধারণ ভক্তরা ফুঁসে উঠেছেন সেন্টুর উপর । শুরু হয়েছে তোলপাড় ।
Discussion about this post