নারায়ণগঞ্জ শহরের স্বর্ণপট্টি এলাকায় জুয়েলারী ব্যবসায়ী প্রবীর হত্যায় ঘাতক পিন্টু দেবনাথ কে ফাঁসির আদেশের পর এবার তৎকালীন সময়ের আলোচিত স্বপন কুমার সাহা ওরফে সাইদুর ইসলাম স্বপন হত্যা মামলায় ওই পিন্টু দেবনাথ কে ফাঁসি ও অপরজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একই সঙ্গে তাদের দুইজনেক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুর দেড়টায় নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক উম্মে সারাবান তহুরা এ রায় দেন।
মামলায় একজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞ বিচারক তার দেয়া রায়ে ঘাতক পিন্টু দেবনাথ কে মৃত্যুদণ্ড ও রত্না রানী চক্রবর্তীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছেন ।
অপর আসামি আব্দুল্লাহ আল মামুনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মাকসুদা আহম্মেদ বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি পিন্টু দেবনাথ ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত রত্মা রানী চক্রবর্তীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। একই সঙ্গে ভিকটিমের মরদেহ সাত টুকরা করে বস্তাবন্দী করে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দিয়েছিল। পরে সেই হত্যাকাণ্ডেরর আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। মোট ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের ভিত্তিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পিন্টু দেবনাথ নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর ব্যবসায়ী বন্ধু প্রবীর কুমার হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছিল। সেই মামলার ভিকটিম ছিল ভোলানাথ জুয়েলার্সের মালিক প্রবীর ঘোষ। তাকে হত্যা করে সাত টুকরো করে সেফটি ট্যাংকিতে রেখে দিয়েছিল।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, পিন্টু দেবনাথ এবং স্বপন কুমার পরস্পর বন্ধু ছিল। তারা একসঙ্গে চলাফেরা করতো। এই পিন্টু দেবনাথ স্বপন কুমারকে উৎসাহ দিয়ে ভারতে নিয়ে যায়। একই সঙ্গে ভারতে ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার কথা বলে স্বপন কুমারের কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা নেন। কিন্তু পিন্টু দেবনাথ স্বপন কুমারের নামে ফ্ল্যাট না কিনে ভাগ্নির নামে ফ্ল্যাট কিনেন। এ নিয়ে তাদের মনোমালিন্যের এক পর্যায়ে স্বপন কুমারকে হত্যার পরিকল্পনা করে এবং তারই অংশ হিসেবে বান্ধবী রত্মা রানীকে দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলায়। একই সঙ্গে রত্মা রানীর বাসায় স্বপন কুমারকে দাওয়াত দেওয়া হয় এবং সেখানে খাবারের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করায়। পরে স্বপন কুমার অচেতন হয়ে গেলে রত্মা রানীর বাসায় থাকা শীল পাটা মাথা আঘাত করে হত্যা করে। হত্যার পর বাসায় থাকা দা দিয়ে মরদেহ খণ্ড খণ্ড করে বাজারের ব্যাগে ভরে উপরে সবজি রেখে শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেয়।
রায় ঘোষণার পর স্বপন কুমারের বড় ভাই অজিত কুমার সাহা বলেন, আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট। রাষ্ট্রপক্ষের কাছে আমাদের দাবি অতিদ্রুত যেন রায়টি কার্যকর করা হয়।
Discussion about this post