শেষ পর্যন্ত ঘটনাটি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতাদের কাছে পৌছালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির পদ থেকে ফয়সাল আলম শিকদারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের প্যাডে ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে রূপগঞ্জ উপজেলা শাখার বর্তমান সহ-সভাপতি তানজির আহমেদ খাঁন রিয়াজকে রূপগঞ্জ উপজেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল আলম শিকদার দুই বউ ও একটি পুত্র সন্তানের জনক হয়েও দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
ফয়সালের পাড়া প্রতিবেশিরা অনায়াশে বিষয়টি জানিয়েছেন গণমাধ্যমকে। অথচ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে বিবাহিত কেউ ছাত্রলীগ করার নিয়ম না থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে ফয়সালের এ বিষয়গুলো দেখার কেউ নেই।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কয়েকজনের সঙ্গে আলোচনা করে জানা যায়, সর্বোচ্চ পরিমাণ গোপনীয়তা রক্ষা করে ফয়সাল আলম শিকদার সংগঠনের দায়িত্বে আছেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এক সহ-সভাপতি জানান, ফয়সাল বিবাহিত সভাই জানে। তার বউ এবং সন্তান আছে। কিন্তু সরাসরি কোন প্রমাণ হাতে না পাওয়ায় তাকে বহিষ্কার করা যায়নি। এখন যেহেতু এলাকার লোকজন মুখ খুলতে শুরু করেছে সুতরাং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ বলেন, কমিটি হওয়ার পরে সেই (ফয়সাল আলম) বিয়ে করেছে। আমরা বিষয়টা জানি। পরবর্তিতে আবার যখন সম্মেলন হবে, আমরা এর ব্যবস্থা নিবো।
২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানী ঢাকার আদদ্বীন হাসপাতালে ফয়সাল শিকদার ও তার স্ত্রী সাদিয়া আক্তারের কোলজুড়ে পুত্র সন্তান আসে। রূপগঞ্জ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের জানান, দেড় বছর আগে উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের দেবই এলাকার সাদিয়াকে বিয়ে করেন রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল আলম শিকদার। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পরই ফয়সাল আলম শিকদার বিয়ে করেন। কিন্তু নিজের পদ টিকিয়ে রাখতে বিয়ের কথা গোপন রাখেন তিনি।
ফয়সাল প্রথম স্ত্রী থাকার পরেও ভূলতা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হারুনের বড় মেয়ে মোসা. রাদিয়াকে বিয়ে করেন। বর্তমানে রাদিয়াকে নিয়ে ঢাকায় বাসা নিয়ে থাকেন ফয়সাল। ফয়সালের দ্বিতীয় বউয়ের মাতা মোসা. জিনু বেগম ঢাকায় থেকেই নানা ধরণের ব্যবসা সামলান। মাঝেমাঝে থাকার জন্য প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মকান্ডে যুক্ত হন।
২০১৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এক বছরের জন্য ফয়সাল আলম শিকদারকে সভাপতি ও শেখ ফরিদ ভুইয়া মাসুমকে সাধারণ সম্পাদক করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল আলম শিকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন।
এমন অস্বীকারের পর ঘটনাটি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতাদের কাছে পৌছালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির পদ থেকে ফয়সাল আলম শিকদারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের প্যাডে ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে রূপগঞ্জ উপজেলা শাখার বর্তমান সহ-সভাপতি তানজির আহমেদ খাঁন রিয়াজকে রূপগঞ্জ উপজেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
Discussion about this post