কয়েকদিনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সোনারগাঁয়ের দলিল লিখক মোশাররফ হোসেন ভুইয়া হত্যাকান্ড ঘটায় স্ত্রী ও তার পরকিয়া প্রেমিক । এই মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তি দেয় ঘাতক স্ত্রী শাহিনুর আক্তার । মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) স্বামী কে প্রথমে ইলেক্ট্রকি শর্ট দিয়ে অচেতন করার পর ফের বালতির পানিতে চুবিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করার মতো হত্যাকান্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দেন তিনি ।
মোশাররফ হোসেন ভুইয়াকে হত্যার পরিকল্পনার ধারাবাহিকতায় শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত প্রায় ২টায় প্রেমিকার জন্য ঘরের দরজা খোলা রাখে স্ত্রী শাহিনুর আক্তার । আর প্রেমিক এসেই ঘুমন্ত মোশাররফ হোসেন ভুইয়াকে ইলেক্ট্রিক শর্ট দিয়ে অচেতন করে ।
সোনারগাঁয়ে পরকীয়ার জেরে মো.মোশারফ হোসেন ভূইয়া নামের এক দলিল লিখককে বৈদ্যুতিক শর্ট দিয়ে ও বালতির পানিতে চুবিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামী পরকীয় প্রেমিক মো. রিপনকে গ্রেপ্তার করেছে সোনারগাঁ থানা পুলিশ।
মামলার প্রধান আসামী মোঃ রিপনকে বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) আদালতে পাঠানোর পর নারায়ণগঞ্জ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত সাহারা বিথী আসামীকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।
আদালতের আদেশ অনুযায়ী আসামী রিপনকে কারাগারে প্রেরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ আদালতের ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামান ।
বুধবার দুপুরে আড়াইহাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করে। ঘটনার পরদিন নিহতের স্ত্রী শাহিনুর আক্তারকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করে। নিহতের স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করে নারায়ণগঞ্জ আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দি দিয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই সোলায়মান বাদি হয়ে সোনারগাঁ থানায় মামলা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়নের খালপাড় চেঙ্গাইন গ্রামের আব্দুল কাদির ভূইয়ার ছেলে দলিল লিখক মো. মোশারফ হোসেন ভূইয়াকে গত শনিবার দিবাগত রাতে ডাকাতরা হত্যা করেছে বলে স্ত্রী শাহিনুর আক্তার দাবি করেন। নিহতের স্ত্রী জানিয়েছেন ৩-৪ জনের একটি ডাকাত দল রাতে ২টার দিকে তার বাড়িতে প্রবেশ করে তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বাথরুমে নিয়ে বালতির পানিতে চুবিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যায়। ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ডাকাতির কোন আলামত না পেয়ে বিষয়টি সন্দেহ হয়। পরে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নিহতের ন্ত্রী শাহিনুর আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন নিহতের স্ত্রী আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন।
জবানবন্দীতে সে জানিয়েছেন, পরকীয় প্রেমিক রিপনকে রাত ২টার দিকে শাহিনুর আক্তার ঘরের জানালা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করায়। মোশারফকে ঘুমন্ত অবস্থায় শাহিনুর ও রিপন মিলে বৈদ্যুতিক শর্ক দিয়ে তাকে নিস্তেজ করে। পরে বাথরুমে নিয়ে বালতির পানিতে চুবিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে রিপন পালিয়ে যায়। পরে ঘরে ডাকাত এসে তার স্বামীকে হত্যা করে পালিয়ে গেলে বলে প্রচার করে।
এলাকাবাসীর দাবি, নিহতের ন্ত্রীর তার পরকিয়া আড়াল করতে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। পরকীয়ার কারনে আগেও একাধিক ছেলের সঙ্গে নিহতের স্ত্রী পালিয়ে যায়।
সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, মোশারফ হত্যাকান্ডে পরকীয় প্রেমিক প্রধান আসামী রিপনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে নিহতের স্ত্রী আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দি দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছে।
Discussion about this post