নারায়ণগঞ্জের শহর ছাড়া ও অলিগলি সর্বত্র ই যেন ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্য। নগরীর পুরাতন কোর্ট এলাকা কিংবা নতুন কোর্ট এলাকাসহ নগরীর এমন কোন এলাকা নেই যেখানে ছিনতাইকারদের দৌড়াত্মে সাধারণ মানুষ হয়রানী কিংবা আঘাৎপ্রাপ্ত হচ্ছে না। খুনের মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছে অহরহ। প্রায় প্রত্যেক দিনে ও রাতে কিংবা ভোরে কমপক্ষে ১০/১২ টি ছিনতাইয়ের ঘটনায় কেউ টাকা খোয়াচ্ছে, কেউ মোবাইল আবার ভোরে প্রাতঃভ্রমণকারী নারী খোয়াচ্ছে মোবাইলসহ অলংকার। এমন অসংখ্য ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার তিন থানা এলাকয় ঘটলেও মামলায় করতে গিয়ে উল্টো হয়রানীর ভয়ে সাধারণ ডায়রী করে ফিরতে হচ্ছে ভূক্তভোগিদের।
এমন অসংখ্য ছিনতাইয়ের ঘটনার পর এবার নগরীর ফতুল্লার মাসদাইর কবস্থানের সামনে এবার ছিনতাইকারীদের কবলে পরে মোবাইল ফোন ও টাকা খুইয়েছেন নারায়নগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এক কনস্টেবল।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ভোর সকাল সাড়ে ৫টায় চাপাতি ও ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তার নিকট থেকে মোবাইল ফোন ও নগদ ৭০০ টাকা ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। এ ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তৎক্ষনাৎ নিজস্ব গোয়েন্দা ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে জড়িত তিন ছিনতাইকারী কে গ্রেফতার করে।
এ সময় গ্রেফতারকৃতদের নিকট থেকে ২ টি চাপাতি ও ছিনতাইকৃত তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো ফতুল্লা মডেল থানার মাসদাইর জামালের গ্যারেজ সংলগ্ন মোঃ ফারুকের পুত্র পারভেজ( ২৫) একই থানার মাসদাইর ছোট কবরস্থানের মৃত সেকান্দরের পুত্র রাজু (২৬) ও একই থানার পশ্চিম মাসদাইর পাকাপুল এলাকার জামালের পুত্র রাকিব হোসেন বিজয় (২১)। এ ঘটনায় ছিনতাইয়ের শিকার পুলিশ কনেস্টেবল তুষার মোল্লা বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃত তিন ছিনতাইকারী সহ অজ্ঞাতনামা পলাতক অপর এক ছিনতাইকারী কে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
জানা যায়, সোমবার ভোর সকাল সাড়ে পাচটার দিকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কনস্টেবল তুষার মোল্লা নিজ কর্মস্থল নতুন কোর্ট জেলা গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয় থেকে পুলিশ লাইন এলাকার বাসায় অটোরিক্সায় করে ফেরার পথে মাসদাইর কবরস্থান সংলগ্ন রাস্তায় তার অটোরিক্সা থামিয়ে গ্রেফতারকৃত তিনজনসহ পলাতক অপর এক ছিনতাইকারী ধারালো অস্ত্র,চাপাতি,হাতুড়ি দিয়ে তাকে ভয় দেখিয়ে তার সাথে থাকা একটি মোবাইল ফোন ও ৭০০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে সে অটোরিক্সায় করে পুনরায় নিজ কর্মস্থল জেলা গোয়ন্দা পুলিশ কার্যালয়ে চলে এসে বিষয়টি কর্মকর্তাদের জানায়। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ কমকর্তারা নিজস্ব সোর্স ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তৎক্ষনাৎ সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে মাসদাইর ছোট কবরস্থান সংলগ্ন এডভোকেট আবুল কালাম আজাদের বাড়ীর নিতলার একটি কক্ষে অভিযান চালিয়ে পারভেজ,রাজুও বিজয় কে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
এ সময় তাদের নিকট থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত দুটি চাপাতি ও ছিনতাইকৃত তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
এমন ঘটনা ছাড়াও ছিনাতাইকারীরা অপহরণের ঘটনা ঘটিয়ে প্রায় প্রতিনিয়তঃ নিজস্ব টর্চাল সেলে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতনের ছবি ধারণ করে পরিবারের কাছে তা পাঠিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনাও ঘটাচ্ছে। এমন ছিনতাইয়ের ঘটনায় অসংখ্যবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলেও টনক নঢ়েনি আইনশৃংখলা বাহিনীর। উল্টো নগরীতে মন্ডলপাড়া, চাষাড়া চত্তরে প্রায়ই পুলিশের সাথে চিহ্নিত ছিনতাইকারীদের দহরম মহরম আড্ডার চিত্র প্রায়ই নগরবাসীর চোখে পরলেও পুলিশের সাফ উত্তর “অপরাধীর সাথে সখ্যতা রেখেই অপরাধী ধরতে হয়।”
Discussion about this post