তুই কই আসিছ, তোর বাড়ি কোথায়, তোকে খুন করবো, মুঠোফোনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের পর ফের নারায়ণগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসাইনকে খুঁজতে গিয়ে আবারো অফিস সহকারীসহ সহকারী প্রকৌশলীদের সামনে গালিকালাজ করে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজলের বিরুদ্ধে । (কাজলের বিরুদ্ধে নির্বাহী প্রকৌশলীর অভিযোগের বক্তব্য সংরক্ষিত রয়েছে)
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরের দিকে এই ঘটনা ঘটে। আড়াইহাজার উপজেলার ভুমি অফিসের কাজের টেন্ডারের অনুমতি পাশ না করার জেরে ওই হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন।
নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, এই ঘটনার পর থেকে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করার উদ্যোগ নিয়েছি। তা প্রক্রিয়াধিন রয়েছে।
গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলী জাকির হোসাইন গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ঢাকার নয়া পল্টন এলাকার বাসিন্দা এপিএম রফিকুল ইসলামের মালিকানাধীন রফিক কনাস্ট্রাকশন কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডকে আআড়াইহাজার উপজেলায় প্রায় ৬৭ লাখ টাকার একটি কাজ পেয়েছিলো। সে কাজটির এগ্রিমেন্ট করার কথা। সেটির জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিককে স্বশরীরে আসতে হয়। কিন্তু সেই ঠিকাদার আসেনি। আর সেটি পাস করে দেওয়ার জন্য খালেদ হায়দার খান কাজল বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আমাকে ফোন করেন। তখন আমি ঢাকায় ছিলাম।
তিনি আরও বলেন, কাজল সাহেব ফোন করে ওই কাজটি পাস করে দেওয়ার জন্য আমাকে ফোর্স করতে থাকেন। যখন আমি তাকে প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলতে যাই তখন তিনি উত্তেজিত হয়ে উঠেন এবং আমাকে যাচ্ছে তাই ভাষায় হুমকি ধামকি দিতে থাকেন। শুধু তাই নয়, তিনি অফিসেও আসেন এবং অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারিদের সাথেও অশোভন আচরণ করেন। ওই সময় তিনি অফিসে হুমকি দিয়ে বলতে থাকেন, আমাকে আমার ঢাকার বাড়িতে গিয়েই দেখিয়ে দিবে। এরপর জোর করে আমার ঢাকার বাসার ঠিকানা নেন আমার পিএ’র কাছ থেকে। এসব ঘটনায় আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এদিকে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসাইনের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেল পর্যন্ত চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজলের মুঠোফোনে গণমাধ্যম কর্মীরা অসংখ্যবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। ফলে তার পক্ষ থেকে কোনো ধরণের বক্তব্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়ে উঠেনি।
ফতুল্লা থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাইনি। পেলে তদন্ত মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএবি) ডিআইও-টু সাজ্জাদ রোমন নারায়ণগ নিউজ আপডেট কে জানিয়েছেন, লোকমুখে বিষয়টি শুনেছি । তবে কোনো অভিযোগ পাইনি। পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।
উল্লেখ্য, খালেদা হায়দার খান কাজল উত্তর চাষাড়ার গোলাম রাব্বানী খানের ছেলে । তিনি মুক্তিযুদ্ধকালিন সময়ে শান্তি কমিটির চাষাড়া ইউসি কমান্ড ছিলেন। এছাড়াও কাজল নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। তিনি একাধারে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি এবং চাষাড়া রাইফেল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন । সাম্প্রতিক সময়ে নানা কারণে খালেদা হায়দার খান কাজলের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয় ।
Discussion about this post