এনএনইউ রিপোর্ট :
নিখোঁজ থাকা শহরের ডিআইটি মসজিদের সামনে ইসলামী বইসহ পন্যসামগ্রী বিক্রেতাকে উদ্ধার দেখিয়ে আদালতে হাজির করার পর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছে মোস্তফা সরকার । বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট হুমায়ুন কবিরের খাস কামড়ায় জবানবন্দি প্রদানের পর আদালত এজাহারভুক্ত একমাত্র আসামী আকরাম হোসেনকে (১) এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত । গত মঙ্গলবার তিন দিনের রিমান্ডের আদেন করে আদালতে পাঠায় পুলিশ ।
জানাা যায়, ১১ জানুয়ারী শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় শহরের দেওভোগ এলাকার ভাড়া বাড়ি থেকে খানপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়ে নিখোজ হয় নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিআইটি মসজিদের সামনে ইসলামী বইসহ ইসলামী নানা পন্যসামগ্রী বিক্রেতা মোস্তফা সরকার । এরপর থেকে আর মোস্তফা সরকারকে খুঁজে না পেয়ে এবং মোবাইল ফোন বন্ধ পেয়ে রাত ১১টায় ৩৮৭ নং সাধারণ ডায়রী এবং সোমবার রাতে সদর থানায় অপহরণের মামলা দায়ের করে নিখোজ থাকা মোস্তফার বাবা হাজী মোঃ লুৎফর রহমান ।
এই মামলায় আসামী করা হয় মোস্তফা সরকারের ব্যবসায়ী অংশীদার আকরাম হোসেনকে । ব্যবসায়ী বিরোধের জের ধরে মামলা ও অসংখ্যবার শহরে শালিশী বৈঠক হলেও কোন সমাধান না হওয়ায় এমন অপহরণ হয়েছে বলে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেয় মোস্তফা । এরপর রিমান্ড শুনানী শেষে আদালত ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
তদন্তকারী দারোগা (পিএসআই) রুস্তম আলী জানান, পুরানো বিরোধের জের ধরে নিখোঁজ থাকা মোস্তফা সরকারের পরিবার বারবার আকরাম হোসেনকে দ্বায়ী করে আসছিলেন। পুলিশও গত তিন দিনে কয়েক দফা আকরাম হোসেনকে থানায় ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদও করে । এরপর মামলা দায়ের করলে আকরাম হোসেনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠাই। আদালতে আকরাম হোসেনকে পাঠানার পর গত মঙ্গলবার বিকেলে নিখোজ থাকা মোস্তফা সরকার রাজধানীর উত্তরা থানায় হাজির হয়ে নিজেকে নিখোজ বলে দাবী করে । খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ থানা পুলিশ উত্তরা থানা থেকে মোস্তফাকে নারায়ণগঞ্জে এনে আজ বুধবার আদালতে উপস্থাপন করি ।
নিখোঁজ থাকা মোস্তফা সরকারের বাড়ী সদর থানার আলীর টেক এলাকায় । পরিবার নিয়ে তারা দেওভোগ চেয়ারম্যান বাড়ি এরাকায় ভাড়া থাকেন । অপরদিকে গ্রেফতার হওয়া আকরামে হোসেনের বাড়ী মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার মাইজ বাড়ী এলাকায় । তার বাবার নাম মৃত জমির আলী ।
শহরের রেলওয়ে ডিআইটি মসজিদের সামনে অংশিদারী ভিত্তিতে ইসলামী পন্য সামগ্রীসহ বই বিক্রির ব্যবসাকে কেন্দ্র করে দ্বন্দের জের ধরে মামলার পর অসংখ্য শালিশী বৈঠক হয় শহরের বিভিন্ন এলাকায়। শালিশ করা অনেকেই জানায়, আকরাম হোসেন ও মোস্তফা দুই জনই খুবই চতুর। কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি না হওয়ায় রেলওয়ের সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করে ইসলামী বই ও পন্যসামগ্রীর ব্যবসা করায় শহরের অনেক প্রভাবশালীদের জড়িয়ে ফেলে দুই পক্ষই । এখন জড়ানো হলো থানা পুলিশকে। পুলিশ এখন ঘটনাটি অপহরণ নাকি সাজানো নাটক তা বের করতে পারবে তদন্ত করলেই।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে শালিশী বৈঠক করা শহরের এক প্রভাবশালী আলোচনার এক পর্যায়ে বলেন, খুব দূর্ধর্ষ চতুর লোক এর পেছনে কলকাঠি নাড়ছে । যাকে এখনো পর্দার আড়াল থেকে বের করতে পারে নাই পুলিশ । সঠিক তদন্ত করলেই বেড়িয়ে আসবে আরেক চাঞ্চল্যকর তথ্য ।
অপহৃত মামলার বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার তদন্ত ইন্সপেক্টর মিজানুর রহমান বলেন, আামাদের প্রথম কাজ ছিলো মোস্তফাকে উদ্ধার করা । তাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছে মোস্তফা সরকার। এর বাইরে অনেক তথ্য আমাদের কাছে এসেছে । যা যাচাই বাছাই করে আদালতের আদেশেই আমাদের তদন্ত কাজ চলবে ।
Discussion about this post